NurKhanAirbase USControl
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : সম্প্রতি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তানের অভ্যন্তরে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোড়ন তুলেছে পাকিস্তানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটি ‘নুর খান এয়ারবেস’–কে ঘিরে এক বিস্ফোরক দাবি। পাকিস্তানের স্বনামধন্য নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেন, নুর খান এয়ারবেস বর্তমানে সম্পূর্ণভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, এবং পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তাদের সেখানে প্রবেশ করারও অনুমতি নেই।
নুর খান এয়ারবেস, যা ইসলামাবাদের কাছে রাওয়ালপিন্ডিতে অবস্থিত, এক সময় পাকিস্তান বিমানবাহিনীর (PAF) গর্ব ছিল। এখানে একাধিক উচ্চ পর্যায়ের সামরিক বিমান চালনা করা হতো। কিন্তু ইমতিয়াজ গুলের মতে, বিগত কয়েক বছরে চুপিসারে এই ঘাঁটি ব্যবহারের অধিকার হস্তান্তরিত হয়েছে আমেরিকার হাতে। এখন নিয়মিতভাবে মার্কিন কার্গো বিমান সেখানে ওঠানামা করে এবং মার্কিন বাহিনী ঘাঁটিতে একচ্ছত্র আধিপত্য চালাচ্ছে।
ভারতের সাম্প্রতিক হামলা, যেটি ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচিত, পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে চালানো হয়। এই অভিযানে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক পরিকাঠামো ধ্বংস করা হয় বলে ভারতের প্রতিরক্ষা সূত্রের দাবি। নুর খান এয়ারবেস ছিল সেই তালিকার শীর্ষে।
অপারেশন সিঁদুর চালানো হয় অত্যন্ত নিখুঁত পরিকল্পনার মাধ্যমে। হামলার ঠিক পরপরই পাকিস্তান সরকার এ নিয়ে নিরবতা পালন করলেও, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সূত্র এবং স্থানীয় রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে যে, এই বিমানঘাঁটিতে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হানে। এতে বিশাল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতেই ইমতিয়াজ গুলের মন্তব্য নতুন করে আগুনে ঘি ঢেলেছে। তিনি বলেন, “নুর খান ঘাঁটিতে পাকিস্তানের জেনারেল বা উচ্চপদস্থ সেনা অফিসাররাও ঢুকতে পারেন না। ঘাঁটিটি এখন মূলত মার্কিন বাহিনীর দ্বারা পরিচালিত।”
Pakistan Nur Khan Airbase is under the lease of USA.
Many US Aircrafts and other assets were present there when India attacked.
USA had to intervene because the attack was not on Pakistan , it was on America.#NurKhanAirBase pic.twitter.com/Ak2GtgrpxD
— Kanwaljit Arora (@mekarora) June 3, 2025
এই মন্তব্য ঘিরে পাকিস্তানে রাজনৈতিক ও সামরিক মহলে চরম অস্বস্তি ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ এটি সরাসরি দেশের সার্বভৌমত্ব ও সামরিক স্বাধীনতার উপর আঘাত। এমনকি টুইটার ও এক্স (X)-এর মতো সামাজিক মাধ্যমে পাকিস্তানের নাগরিকদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকে বলছেন, “যদি সত্যিই এটি মার্কিনদের নিয়ন্ত্রণে থাকে, তবে পাকিস্তান কি আজ স্বাধীন রাষ্ট্র?”
পাক সরকারের তরফে এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। এমনকি পাকিস্তান সেনাবাহিনীও এই দাবি নাকচ করে দেয়নি বা নিশ্চিত করেনি। ফলে সাধারণ মানুষ ও বিশ্লেষক মহলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
মায়ানমারে মার্কিন ‘ছায়াযুদ্ধ’ পরিকল্পনা: উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
ভারতীয় বাহিনীর পাকিস্তানে বিমানঘাঁটিতে হামলা: ‘অপারেশন সিন্ধুর’ বিস্তারিত বিশ্লেষণ
বহুবছর ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে পরিচিত, বিশেষ করে আফগানিস্তানে তালিবান দমন অভিযানের সময়। কিন্তু সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতা ও ইরান ঘেঁষা কূটনৈতিক অবস্থানের পর, অনেকেই মনে করছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের ভিতরে নিজেদের স্ট্র্যাটেজিক অবস্থান পাকা করতে চাইছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নুর খান এয়ারবেসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি সামরিক লজিস্টিক হাব হিসেবে ব্যবহার করছে, যা শুধুমাত্র পাকিস্তানের জন্য নয়, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার বাকি অংশেও মার্কিন আগ্রাসনের কৌশলগত দিক নির্দেশ করে।
আরও পড়ুন :