WBSchools MamatasBooks
ক্লাউড টিভি | কলকাতা :পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাদপ্তর সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, যেখানে জানানো হয়েছে—রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ১৯টি বই গ্রন্থাগারে রাখা বাধ্যতামূলক। এই নির্দেশিকা অনুযায়ী, প্রতিটি স্কুল পাবে ১ লক্ষ টাকা করে অনুদান, সেই টাকায় কিনতে হবে সরকার নির্ধারিত তালিকার ৫১৫টি বই, যার মধ্যে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নিজের লেখা (WBSchools MamatasBooks) একাধিক বই।
এই সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে শিক্ষক মহল এবং বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরে।
তালিকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা যেসব বই রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে:
‘উপলব্ধি’,
‘অমর পাহাড়’,
‘চলো যাই’,
‘পথের সাথী’,
‘মানবিক’,
‘কথাঞ্জলি’,
‘Crocodile Island’
সহ মোট ১৯টি বই।
সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, এগুলোর প্রতিটির একাধিক কপি রাখা হবে লাইব্রেরিতে, যাতে শিক্ষার্থীরা ‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চিন্তা ও সাহিত্য’ সম্পর্কে পরিচিত হতে পারেন।
রাজ্য শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন,
“এটা একটি অশিক্ষাসুলভ পদক্ষেপ। বিদ্যালয়গুলি তাদের নিজস্ব পছন্দমাফিক বই কিনতে পারছে না। এটা স্কুল শিক্ষার স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ।”
অন্যদিকে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ শিক্ষক সংগঠনগুলি বলছে,
“মুখ্যমন্ত্রী একজন জনপ্রিয় কবি ও সাহিত্যিক। তাঁর বই পাঠ্যসূচির বাইরের সাহিত্য হিসেবে ছাত্রছাত্রীদের চিন্তাভাবনাকে প্রসারিত করবে।”
বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র কটাক্ষ করে লিখেছেন,
“শিক্ষা ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চ বানানো হচ্ছে। সরকার অর্থ দিয়ে নিজের নেত্রীর বই কিনে জোর করে ছাত্রদের পড়াতে চাইছে — এটা দুর্নীতি।”
Another Day, Another TMC Scam!
In Mamata Banerjee’s Bengal, even school children are not spared from corruption.
In a bizarre and shameful move, government schools in West Bengal are being forced to buy 19 books written by Mamata Banerjee to be eligible for a ₹1 lakh grant.… pic.twitter.com/5cnHTDeM7b
— Amit Malviya (@amitmalviya) June 24, 2025
বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের অভিযোগ, “এইভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বই বাজারে জোর করে ঢোকানো একপ্রকার নেত্রীপুজা।”
রাজ্যের ২০২৬টি স্কুলে এই প্রকল্প কার্যকর হবে।
প্রত্যেক স্কুল পাবে ১ লক্ষ টাকা করে লাইব্রেরি উন্নয়নের অনুদান।
৫১৫টি বইয়ের তালিকা তৈরি করেছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর।
মুখ্যমন্ত্রীর বই বাদেও রয়েছে রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, বিভূতিভূষণ, অমর্ত্য সেন, অরুন্ধতী রায়ের লেখা।
কিন্তু শিক্ষকমহলের প্রশ্ন, এত বৈচিত্রের বই থাকতে কেন মুখ্যমন্ত্রীর নিজের বইগুলো বাধ্যতামূলক?
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বনাম সাহিত্য প্রসার:
মুখ্যমন্ত্রীর বই বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে কি রাজনীতি ঢুকে পড়ছে স্কুল শিক্ষায়?
বই নির্বাচনের স্বাধীনতা কোথায়?
শিক্ষক ও স্কুল লাইব্রেরিয়ানদের স্বাধীনভাবে বই নির্বাচন করার অধিকার খর্ব হচ্ছে বলেই মত অনেকের।
সরকারি টাকা দিয়ে নিজের বই প্রচার?
সরকার নিজে তার নেতার লেখা বই কিনতে বাধ্য করছে, এই অভিযোগকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।
আরও পড়ুন :
কালিয়াগঞ্জ উপনির্বাচন : তৃণমূলের বিজয়োল্লাস থেকে ছোড়া সকেট বোমায় মৃত্যু নাবালিকার !
বাম-কংগ্রেস-বিজেপি জোটের জয়, ২০২৬ বিধানসভা ভোটে পরিবর্তনের আভাস?