Breaking News

AbalaBose

স্বামীর কীর্তির ছায়ায় লুকিয়ে থাকা আলোকবর্তিকা: অবলা বসু, প্রথম বাঙালি মহিলা ডাক্তারি পড়ুয়া

বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর সঙ্গী, পরামর্শদাতা ও ছায়াসঙ্গী... ‘বিদ্যাসাগর বানী ভবন’ ও ‘সাধনা আশ্রম’-এর প্রতিষ্ঠাতা, নারীদের শিক্ষা ও স্বনির্ভরতার এক শক্ত ভিত্তি গড়ে তুলেছিলেন

AbalaBose: The Pioneer of Women's Education %%page%% %%sep%% %%sitename%%

AbalaBose

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : স্বামীর ছায়ায় থেকে যাওয়া এক মহীয়সী নারীর নাম অবলা বসু (AbalaBose)। তিনি শুধু বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর সহধর্মিণী নন, তিনি ছিলেন এক আলোকবর্তিকা, যিনি বাংলার নারীদের জন্য শিক্ষার আলো ও স্বনির্ভরতার পথ খুলে দিয়েছিলেন।

১৮৮১ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় স্কলারশিপ নিয়ে পাশ করেছিলেন অবলা। তাঁর স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার, কিন্তু সেই সময় কলকাতা মেডিকেল কলেজে নারীদের প্রবেশাধিকার ছিল না। তাঁর বাবা দুর্গামোহন দাশ তাঁকে পাঠালেন মাদ্রাজে (বর্তমান চেন্নাই)। অবলা সেখানে পড়াশোনার জন্য মাসে কুড়ি টাকা স্কলারশিপ পেতেন। যদিও নানা মত অনুযায়ী তিনি হয় অসুস্থতা অথবা বিবাহের কারণে পড়া শেষ না করেই ফিরে আসেন কলকাতায়।

যদি তিনি পড়া শেষ করতেন, তবে নিঃসন্দেহে প্রথম বাঙালি মহিলা ডাক্তার হতেন। তবুও ইতিহাসে তাঁর স্থান অমলিন—কারণ তিনি ছিলেন সেই সময়ের প্রথম বাঙালি নারী যিনি মেডিকেল পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন।

যে ১০ দেশে মোট জনসংখ্যায় মহিলার অনুপাত বেশি!

দারিদ্র দূরীকরণে বিশ্বব্যাঙ্কের স্বীকৃতি: ভারতের দশকে বড় সাফল্য

১৮৮৭ সালে তাঁর বিয়ে হয় জগদীশচন্দ্র বসুর সঙ্গে। সংসারে আর্থিক সংকট থাকলেও অবলা ছিলেন স্বামীর শক্তি ও সাহসের আধার। নিজের মেধা থাকা সত্ত্বেও তিনি বিখ্যাত হওয়ার পথ বেছে নেননি। জগদীশচন্দ্রের গবেষণার প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি পাশে থেকেছেন, পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন ছায়াসঙ্গীর মতো।

তবে অবলা বসু নিজস্ব পরিচিতিও গড়েছেন শিক্ষাক্ষেত্রে। ১৯১৯ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘নারী শিক্ষা সমিতি’, যার মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুত, প্রসূতি ও শিশুস্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন শুরু হয়। তাঁর নেতৃত্বে ৮৮টি বিদ্যালয় গড়ে ওঠে বাংলার গ্রামাঞ্চলে।বিদেশ সফরের সময় তিনি ইউরোপের শিশু শিক্ষার পদ্ধতি দেখে অনুপ্রাণিত হন এবং দেশে সেই মডেল অনুসরণে ১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘বিদ্যাসাগর বানী ভবন’, যা পরে টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউশন হিসেবে রূপ পায়।নারী ও বিধবাদের শিক্ষায় বিশেষ নজর দেন অবলা। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ‘সিস্টার নিবেদিতা ওমেনস এডুকেশন ফান্ড’ এর মাধ্যমে বয়স্ক মহিলাদের জন্য ১৪টি স্কুল গড়ে ওঠে। এছাড়া বিধবা মহিলাদের পুনর্বাসনের জন্য গড়ে তোলেন ‘সাধনা আশ্রম’।

আজও ইতিহাসে অবলা বসুর অবদান অনেকটাই আড়ালেই রয়ে গেছে। কিন্তু যাঁরা নারীর উন্নয়ন ও শিক্ষা আন্দোলনে বিশ্বাস রাখেন, তাঁদের কাছে তিনি এক অনন্য অনুপ্রেরণা। তিনি চাইলেই হতে পারতেন প্রথম বাঙালি মহিলা ডাক্তার, কিন্তু তার বদলে বেছে নিয়েছিলেন আরও অনেক নারীর জীবন আলোকিত করার পথ।

আরও পড়ুন :

ইন্ডিয়ান পোস্টের DIGIPIN—ডিজিটাল জিও-এড্রেস সিস্টেম

বিশ্বে নজিরবিহীন জন্মহার হ্রাস: জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

ad

আরও পড়ুন: