চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নতুন HIDCO চেয়ারম্যান
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : রাজ্যের নগর অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা HIDCO (Housing Infrastructure Development Corporation) এবার নতুন নেতৃত্ব পেল। পশ্চিমবঙ্গ সরকার চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে এই সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত চন্দ্রিমা ইতিমধ্যেই অর্থ ও স্বাস্থ্য দপ্তরে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। ফলে তাঁর নতুন দায়িত্বকে রাজনৈতিক মহল একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।
HIDCO মূলত রাজ্যের নতুন শহর গড়ে তোলা ও আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণে নিয়োজিত।
নিউ টাউন, রাজারহাট-এর মতো পরিকল্পিত শহরের আবাসন প্রকল্প, সড়ক, জল, বিদ্যুৎ ও ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলা HIDCO-র প্রধান কাজ।
স্মার্ট সিটি প্রকল্প, ইকো-পার্ক, ফিনটেক হাব, তথ্যপ্রযুক্তি অঞ্চল তৈরি – এসব HIDCO-র উদ্যোগে সম্ভব হয়েছে।
ফলে এই সংস্থার চেয়ারম্যান পদ শুধু প্রশাসনিক নয়, রাজনৈতিকভাবেও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, রাজ্যের শহুরে উন্নয়ন নীতির সঙ্গে এটি সরাসরি যুক্ত।
২০২১ সাল থেকে এই পদে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম। কলকাতার নগর উন্নয়ন ও পুর দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে তিনি একসঙ্গে HIDCO-র নেতৃত্বও দিচ্ছিলেন। তবে গত বছর ডিসেম্বর মাসে রাজ্য মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয় HIDCO আর Urban Development দপ্তরের অধীনে থাকবে না।
Breaking : সরানো হল ফিরহাদকে (Firhad Hakim), আপাতত হিডকোর (HIDCO)কাজ নিজেই দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী
এটিকে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে এনে দেওয়া হয় Personnel and Administrative Reforms (PAR) Department-এর আওতায়।
এর ফলে HIDCO-র কার্যক্রম এখন থেকে আরও বেশি করে মুখ্যমন্ত্রীর নজরদারিতে চলবে।
এই পরিবর্তনের প্রায় আট মাস পর নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে এলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য একজন অভিজ্ঞ নেতা ও প্রশাসক।
তিনি বর্তমানে অর্থ দপ্তরের মন্ত্রী (Minister of State for Finance) এবং স্বাস্থ্য দপ্তরেরও কিছু দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
দীর্ঘদিন ধরে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
রাজ্যপাটে তাঁর অবস্থান ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়েছে এবং এখন HIDCO-র চেয়ারম্যান পদে বসানোয় তাঁকে “গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী” বলেই দেখছেন অনেকে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই নিয়োগের মধ্যে একাধিক বার্তা আছে—
ক্ষমতার ভারসাম্য বদল:
ফিরহাদ হাকিমের হাত থেকে HIDCO সরিয়ে চন্দ্রিমার হাতে তুলে দেওয়ায় বোঝা যাচ্ছে তৃণমূলের ভেতরে দায়িত্ব বণ্টনে নতুন ভারসাম্য আনা হচ্ছে।
মহিলা নেতৃত্বে জোর:
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই মহিলা নেতৃত্বকে সামনে আনার চেষ্টা করেছেন। HIDCO-র মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে একজন মহিলা নেত্রীকে বসানো সেই কৌশলেরই অংশ।
আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি:
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজ ও অবকাঠামো উন্নয়ন তৃণমূলের প্রচারের বড় হাতিয়ার হতে পারে। HIDCO-তে চন্দ্রিমার নিয়োগ তারই অঙ্গ।
চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন—
“আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি আমাকে যে আস্থা দেখিয়েছেন, আমি সেই আস্থা রক্ষা করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। রাজ্যের নাগরিক অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করব।”
সম্ভাব্য প্রভাব
নিউ টাউন ও রাজারহাট অঞ্চলের উন্নয়ন গতি পাবে।
আবাসন ও শহুরে পরিকাঠামো প্রকল্পে আরও স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আসবে বলে প্রশাসনিক মহলের আশা।
HIDCO-র মাধ্যমে রাজ্য সরকার ২০২৬ সালের আগে উন্নয়নের বার্তা জনতার কাছে পৌঁছাতে চাইবে।
আরও পড়ুন :
মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বোধন করবেন উডবার্ন ২-র
Supreme Court Verdict: আংশিক স্থগিত ‘ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫’ | বিস্তারিত জানুন