DamodarFlood MithonPanchetRelease
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | কলকাতা, ১৮ জুলাই, ২০২৫ : দামোদর ভ্যালিতে বৃষ্টি এবং জলাধার থেকে লাগাতার জল ছাড়ার ফলে বন্যা পরিস্থিতি ঘনীভূত হচ্ছে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়। বৃহস্পতিবার সকালে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে আবারও মোট প্রায় ৫৭ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে, যার মধ্যে পাঞ্চেত থেকে ৩৮ হাজার ও মাইথন থেকে ১৮ হাজার কিউসেক। এই বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ার (DamodarFlood MithonPanchetRelease) জেরে হুগলির খানাকুল, হরিপাল, আরামবাগ, হাওড়ার আমতা, উদয়নায়ণপুর, এমনকি বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমানেও বন্যার আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে।
সেচ দফতরের একাধিক আধিকারিক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দামোদর নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়েছে দুর্গাপুর ব্যারাজে। প্রবাহ বাড়তে থাকলে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকেও আরও জল ছাড়তে হতে পারে, ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা।
গত কয়েক দিনের লাগাতার বৃষ্টির কারণে আগেই বিভিন্ন নদী-নালায় জলস্ফীতি তৈরি হয়েছিল। তার ওপর জলাধার থেকে হঠাৎ এই বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ার ফলে পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
বিপর্যস্ত যোগাযোগ ও কৃষিকাজ
হুগলির খানাকুল, আরামবাগ, হরিপাল ও আশেপাশের এলাকায় নিম্নাঞ্চল ইতিমধ্যেই জলের তলায় চলে গিয়েছে। অনেক জায়গায় রাস্তা ডুবে যাওয়ায় বন্ধ হয়েছে যান চলাচল। স্কুল-কলেজে স্বাভাবিক পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। চাষের জমিতে ঢুকে পড়েছে জল, যার ফলে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছেন কৃষকরা।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই কয়েকশো মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে হরিপাল ও খানাকুলে। তবে বহু গ্রাম এখনও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।
জল নিয়ন্ত্রণে কি ব্যর্থতা?
বন্যা পরিস্থিতির জন্য অনেকেই ডিভিসি (Damodar Valley Corporation)-কে দায়ী করছেন। বৃষ্টির পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিল, তা সত্ত্বেও হঠাৎ এত বড় পরিমাণে জল ছাড়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ডিভিসি সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধারে জলধারণ ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল, তাই বাধ্য হয়েই জল ছাড়তে হয়েছে।
হুগলি জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, “আমরা আগে থেকেই সতর্ক ছিলাম, তবে এত কম সময়ে এতটা জল ছাড়া হবে — সেটা অনুমান করা কঠিন ছিল। এখন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনা ও এনডিআরএফ-এর সহায়তাও চাওয়া হয়েছে।”
স্কুল বন্ধ, বাস চলাচলে ব্যাঘাত
হাওড়া ও হুগলির বেশ কিছু স্কুল শুক্রবার ও শনিবার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। সরকারি বাস সংস্থাগুলিও কিছু রুট আপাতত স্থগিত রেখেছে। হাওড়া-আরামবাগ ও হাওড়া-খানাকুল রুটে ট্রেন ও বাস চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
জল বাড়তেই বাড়ছে আতঙ্ক
পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়ার কিছু গ্রাম থেকে ইতিমধ্যেই জল ঢোকার খবর এসেছে। সেখানে নদী সংলগ্ন গ্রামগুলিতে নদীর বাঁধ দুর্বল হওয়ায় আতঙ্ক আরও বেশি। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।
আরও পড়ুন :
স্লো ওভার রেটের খেসারত: লর্ডস টেস্ট জিতেও পয়েন্ট হারাল ইংল্যান্ড
আইএসএল স্থগিত: “ভারতীয় ফুটবলের অবস্থা উদ্বেগজনক” — সোজাসাপটা মন্তব্য সুনীল ছেত্রীর