Digha Jagannath Bhog
দিঘা, ১৪ জুন : দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের পেছনে রয়েছে এক বিশাল, অথচ নিঃশব্দ এক কর্মযজ্ঞ – জগন্নাথদেবের রান্নাঘর। এখান থেকেই প্রতিদিন চারবার মন্দিরে পাঠানো হয় জগন্নাথের ভোগ (Digha Jagannath Bhog)। রান্নার এই প্রক্রিয়া শুরু হয় রাত তিনটে থেকেই। কারণ, সকাল সাড়ে চারটেয় দেবতার প্রথম ভোগ নিবেদনের আগে সব প্রস্তুতি শেষ করতে হয়।
এই পবিত্র রন্ধন শালায় কাজ করেন প্রায় ১৬ জন পুরুষ সেবায়েত ও কুড়ি জন মহিলা সহযোগী। এদেরই একজন মুম্বাই থেকে আসা রান্নার সেবায়েত তমাল গোবিন্দ দাস, যিনি জানালেন—
“প্রথমে মিষ্টিভোগ, তারপর দুপুরের জন্য খিচুড়ি, তরকারি, সন্ধ্যায় ফল-মূল, আর রাতে আবার নিরামিষ ভাত-ডাল-তরকারি রেঁধে পাঠানো হয় মন্দিরে।”
অপর সেবায়েত শ্রীনিবাস ঠাকুর জানালেন,
“পুরীর মতো কাঠের চুল্লিতে নয়, এখানে রান্না হয় গ্যাস উনুনে। আমাদের রান্নাঘরে জাম্বো ফ্রিজ, বড় মাপের মাটির হাঁড়ি, অ্যালুমিনিয়াম বালতি, স্টিলের ড্রাম – সবই প্রস্তুত থাকে। এক একটা রান্না মানে শুধু ভোগ নয়, ভক্তির অর্ঘ্য।”
এই রান্নার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মহিলা সেবায়েতরা। তিনটি শিফটে ভাগ হয়ে তাঁরা সারাদিন আনাজ কাটা, হাঁড়ি ধোওয়া, মেঝে পরিস্কার, প্যাকিং-সহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন।
মহিলা সেবায়েতদের একজন বললেন,
“রাত তিনটেয় উঠে রান্নাঘরে আসি। খিচুড়ি, ক্ষীর, নাড়ু — সবই আমাদের হাতে তৈরি হয়। ভগবানকে খাওয়ানোর আনন্দ আমাদের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়।”
প্রতিদিনের ৫৩ ভোগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ মেনু রাঁধা হয় এখানে। রথযাত্রার সময় এক সপ্তাহ ধরে বিশেষ ভোগ রান্না হয় এবং সেই ভোগ দিঘা শহরের হাজার হাজার দর্শনার্থীর মধ্যে বিতরণ করা হয়।
দিঘায় জগন্নাথ ধামের শুভ উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী, প্রতিটি গৃহে পৌঁছবে প্রসাদ ও ছবি
এই পবিত্র রান্নাঘর শুধু একখানা ভোজনালয় নয় – এটি এক অপার আধ্যাত্মিক কর্মস্থল। এখানে রান্না হয় না শুধু খাবার, বরং নিবেদন হয় প্রার্থনা, নিষ্ঠা ও ভক্তির স্বাদে মাখা এক একেকটা পদ।
আরও পড়ুন :
৬৪ বছর পর উত্তরবঙ্গের দিকে ট্রেন চলাচল শুরু, রানাঘাট থেকে হামসফর এক্সপ্রেসে ইতিহাসের পুনর্জন্ম
ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে সদ্যজাত শিশুর মৃত্যু, উত্তেজনা এলাকাজুড়ে