ElephantAttack Jalpaiguri
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি মহকুমার বানারহাটে ফের বুনো হাতির তাণ্ডব। মাত্র চার ঘণ্টার ব্যবধানে প্রাণ হারালেন দুই চা-বাগান শ্রমিক। বুধবার গভীর রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোরের মধ্যে ঘটে যাওয়া এই দুই মর্মান্তিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা ডুয়ার্স জুড়ে। নিহতদের নাম সোমরা ওরাওঁ (৫০) এবং গুরুয়া ওরাওঁ (৬০)। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, হাতি প্রথমে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারে, তারপর পিষে দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত প্রায় সাড়ে বারোটার সময় বানারহাট ব্লকের দুরামারি এলাকার চানাডিপা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন সোমরা ওরাওঁ। হঠাৎই অন্ধকারে গ্রামে ঢুকে পড়ে একটি বুনো হাতি। কোনও কিছু বোঝার আগেই হাতিটি সোমরাকে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে মাটিতে আছাড় মারে এবং পরে পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
জলপাইগুড়িতে ১৫ জন আক্রান্ত, ইঁদুরবাহিত লেপ্টোস্পাইরা নিয়ে উদ্বেগ
জৈসলমীরে DRDO গেস্ট হাউস ম্যানেজার গ্রেফতার: পাঁচ বছর ধরে পাকিস্তানের ISI-র হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি
প্রথম ঘটনার চার ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার ভোর প্রায় সাড়ে চারটায় তোতাপাড়া চা-বাগানের বাসলাইন এলাকায় ঘটে দ্বিতীয় দুর্ঘটনা। গুরুয়া ওরাওঁ প্রতিদিনের মতো জঙ্গলের ধারে প্রাতঃকৃত্য সারতে গিয়েছিলেন। সেখানেই বুনো হাতির মুখোমুখি হন তিনি। মুহূর্তের মধ্যে একই কায়দায় আক্রমণ করে হাতিটি— প্রথমে আছাড়, তারপর পিষে মৃত্যু।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরেই হাতির একটি দল বানারহাট ব্লকের গ্রাম ও চা-বাগান অঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। রাতের বেলায় তাদের আনাগোনা বেড়েছে, যা স্থানীয়দের জন্য এক বড় বিপদে পরিণত হয়েছে।
গ্রামবাসীরা অভিযোগ তুলেছেন, বন দপ্তর বুনো হাতিদের গ্রামে ঢোকা ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে প্রাণহানি। “আমরা বারবার বন দপ্তরকে জানিয়েছি, কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না,” অভিযোগ এক স্থানীয়ের।
ঘটনার খবর পেয়ে বানারহাট থানার পুলিশ ও বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণী স্কোয়াড ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পাশাপাশি স্থানীয়দের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যে, রাতে একা বা ছোট দলে কেউ যেন বাড়ির বাইরে না যান। বন দপ্তরও হাতির গতিবিধি নজরে রাখছে বলে জানিয়েছে, তবে গ্রামবাসীদের আস্থা ফেরাতে কার্যকর উদ্যোগের দাবি উঠছে।
এই ঘটনায় ফের স্পষ্ট হলো, মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সংঘর্ষ ডুয়ার্সে মারাত্মক আকার ধারণ করছে। চা-বাগান এলাকা ও গ্রামাঞ্চলে বুনো হাতির হামলা রোধে না হলে আরও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন :
রাজ্যের নির্দেশে সারা বছর সিনেমা হলে বাধ্যতামূলক বাংলা ছবি প্রদর্শন