বাম-কংগ্রেস-বিজেপি জোটের জয়, ২০২৬ বিধানসভা ভোটে পরিবর্তনের আভাস?

TMCvsOpposition CPMBJPINC

জলপাইগুড়ি, উত্তরবঙ্গ : ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এক বড় ধাক্কা হয়ে উঠল জলপাইগুড়ির মাটিয়ালি কৃষি সমবায় সমিতির ফলাফল (TMCvsOpposition CPMBJPINC)। কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই, বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপির যুগ্ম প্যানেল এই সমিতির বোর্ড দখল করায় রাজনীতিতে এক নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত স্পষ্ট।

উত্তর ধূপঝোড়ার অফিস প্রাঙ্গণে এক সাধারণ সভায় বাম-কংগ্রেস-বিজেপি জোটের ছয় জনের একটি যৌথ প্যানেল গঠন হয়। তৃণমূল কংগ্রেস কোনও প্রার্থী না দেওয়ায় নির্বাচন ছাড়াই বোর্ড গঠিত হয়। এরপরই সমিতি প্রাঙ্গণে বিজয়ের আনন্দে রাঙে লাল ও গেরুয়া আবির। বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস নেতাদের একক কণ্ঠে ঘোষণা, এটা শুধু রাজনৈতিক বার্তা নয়, কৃষকদের স্বার্থরক্ষার দিকেও এক ইতিবাচক পদক্ষেপ।

লোকসভায় শূন্য, বিধানসভায় শূন্যের পরে এবারে রাজ্যসভায়ও শূন্য হবে সিপিএম!

কোন রাজ্যে কত ওয়াকফ সম্পত্তি, জানলে অবাক হবেন!

বিজেপির প্রাক্তন সমতল মণ্ডল সভাপতি মজনুল হক বলেন,

“এই বোর্ড শাসক দলের বিরোধী শক্তির মিলিত প্রয়াস। তৃণমূল কোনও প্যানেলই দিতে পারেনি। সেটাই প্রমাণ করে জনগণের মনোভাব বদলাচ্ছে।”

সিপিএম নেতা দীনেশ রায় জানান,

“এই বোর্ড নিছক রাজনৈতিক মঞ্চ নয়। এটা কৃষকদের স্বার্থে একটি কার্যকর যৌথ প্রয়াস। প্রতিটি সিদ্ধান্ত সম্মিলিতভাবে নেওয়া হবে।”

তবে গোটা বিষয়টিকে বেআইনি বলেই দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মাটিয়ালি ব্লক সভানেত্রী স্নোমিতা কালান্দি জানান,

“এই সাধারণ সভার কথা অধিকাংশ সদস্যকে জানানো হয়নি। এটা একতরফা ও নিয়মবহির্ভূত বোর্ড গঠন। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন দপ্তরের নজরে আনছি।” শাসক দল আরও দাবি করেছে, কিছু ভোটারকে অবৈধভাবে সদস্য করা হয়েছে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্ব হয়েছে।

জলপাইগুড়ি জেলা মূলত চা-বাগান এবং কৃষিপ্রধান অঞ্চল। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রাজ্যে শাসক হিসেবে থাকা তৃণমূল কংগ্রেস এই প্রথম এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি কৃষি সমবায় ভোটে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হলো। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই অঞ্চলের কৃষকদের একটি বড় অংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের, যারা এবার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তৃণমূলের দিক থেকে—এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে,

“এই ফলাফল প্রমাণ করে, বিরোধীরা যদি শক্তিশালী জোট গঠনে সফল হয়, তবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রেজিম চেঞ্জের সম্ভাবনা প্রবল।” মাটিয়ালি কৃষি সমবায় সমিতিতে বিরোধী জোটের এই সাফল্য অনেক বড় বার্তা দিচ্ছে রাজনীতির মাঠে। এটা শুধু একটি সমবায় সমিতির নির্বাচন নয়, বরং উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ রাজনীতিতে ভাঙনের প্রতিচ্ছবি।

আরও পড়ুন :

২৫ শতাংশ ডিএ নিয়ে রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষা, নবান্নের নির্দেশের অপেক্ষায় রাজ্যের সরকারি কর্মীরা

তেহরানের রাস্তাঘাট যেন অস্থিরতার গল্প: পাতালেই রাত কাটাচ্ছে সাধারণ মানুষ, যুদ্ধের ভয়াল ছায়ায় রয়ে যাচ্ছে তবুও অনেকে