গঙ্গাসাগর বাঁধ ভাঙন
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগর অঞ্চলে ফের দেখা দিয়েছে নদী বাঁধ ভাঙনের আশঙ্কা। সোমবার সকালে মহিষামারি বাগু মোড় সংলগ্ন এলাকায় নদীর পাড়ে জল নিকাশ শুলিস গেটের পাশের বাঁধের একটি বড় অংশ ভেঙে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যেই নোনা জল ঢুকে পড়ে আশপাশের গ্রামে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে।
এই খবর পাওয়ার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সাগরের বিডিও কানাইয়া কুমার রাও এবং সেচ দপ্তরের একাধিক পদস্থ আধিকারিক। মন্ত্রী নিজে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দেন।
মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন,
“এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো বাঁধ মেরামত। প্রশাসন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করবে। যাতে আর কোনো গ্রামে জল না ঢোকে।”
বিডিও ও সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা জানান, বাঁধ সংস্কারের কাজ অবিলম্বে শুরু করা হবে। নোনা জল যাতে কৃষিজমি ও বসতবাড়িতে প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে।
স্থানীয় মানুষজনের অভিযোগ, এ অঞ্চলটি বহুদিন ধরেই বাঁধ দুর্বলতার সমস্যায় ভুগছে। বর্ষা বা জোয়ারের সময় সামান্য চাপ পড়লেই নদীর বাঁধ ফেটে যায়। এবারে শুলিস গেটের পাশের অংশে ভাঙনের ফলে এলাকার একাংশ প্লাবিত হয়েছে। মাছচাষ, চাষবাস এবং ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এলাকাবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক থাকলেও, প্রশাসনের আশ্বাসে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। মন্ত্রীর পরিদর্শনের সময় স্থানীয়রা স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান। তাঁদের বক্তব্য, “প্রতিবারই অস্থায়ীভাবে মেরামত হয়, কিন্তু স্থায়ী বাঁধ না হলে বিপদ যাবে না।”
মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা স্থানীয়দের আশ্বস্ত করে বলেন,
“এই অঞ্চল সুন্দরবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্থায়ী সমাধানের জন্য সেচ দপ্তর ও সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তর একসঙ্গে কাজ করবে।”
পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী ও বিডিও গঙ্গাসাগরের ১ নম্বর স্নানঘাট-এ যান। সম্প্রতি সমুদ্রের ঢেউয়ের চাপে ঘাটের অংশবিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সেখানে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
ইন্দিরাকে ছাড়িয়ে মোদির নতুন রেকর্ড: দ্বিতীয় দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী ভারত ইতিহাসে
মুখ্যমন্ত্রী কে ক্লাস সেভেনের ভুগোল বই পড়ার পরামর্শ দিলেন শুভেন্দু অধিকারী
প্রশাসন জানিয়েছে, বাঁধ ও স্নানঘাট উভয় স্থানে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মেরামতির কাজ শুরু হবে। পাশাপাশি, ভাঙন এলাকায় অতিরিক্ত পাম্প বসানো হচ্ছে যাতে দ্রুত জল নিষ্কাশন করা যায়।
পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, স্থানীয়দের দাবি—বর্ষাকাল আসার আগেই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, গঙ্গাসাগর যেহেতু তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, তাই বাঁধের এই দুর্বলতা প্রশাসনের জন্য বড় সতর্কবার্তা।
আরও পড়ুন :
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা প্রশ্ন: “আপনারা কি চান আগে গ্রেফতারি, নাকি বন্যা মোকাবিলা?”
পাকিস্তানে জাফর এক্সপ্রেসে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, ছয়টি কোচ বেলাইন — নিরাপত্তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন