HealthcareAccess MedinipurNews
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | পটাশপুর, পূর্ব মেদিনীপুর : পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে বেহাল রাস্তাই কেড়ে নিল এক গৃহবধূর প্রাণ। সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানো গেল না, মৃত্যু হল রাস্তাতেই (HealthcareAccess MedinipurNews)। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ফের একবার রাজ্যের পরিকাঠামো ও প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
গত রবিবার আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন পটাশপুরের অমলপুর গ্রামের বাসন্তী দাস। পরিবারের সদস্যরা কোনওভাবে টোটো করে তাঁকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু গ্রামের কর্দমাক্ত ও চরমভাবে বেহাল রাস্তার কারণে টোটো চলা তো দূরের কথা, ঠেলে ঠেলেও গন্তব্যে পৌঁছানো যাচ্ছিল না। প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাজুড়ে কাদা, গর্ত ও জল জমে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতেই হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই রাস্তাতেই মৃত্যু হয় বাসন্তী দেবীর।
এই ঘটনার পরেই ফুঁসে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ক্ষোভে ফেটে পড়ে পুরো গ্রাম। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে রাস্তার হাল এমনই, প্রশাসনকে বহুবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। নেতারা শুধু ভোটের সময় আসেন, প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।
রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামবাসীদের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। প্রায় ১৫ দিন আগে অমলপুর গ্রামে রাস্তা সংস্কারের দাবিতে অবরোধও করা হয়। বিডিও সেখানে গিয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন দ্রুত কাজ শুরু হবে। কিন্তু তার মধ্যেই এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল।
শ্রাবণ যাত্রায় মৃত্যু ৮ পুণ্যার্থীর, ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা
এই ঘটনার পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি তাপস কুমার মাজি বলেন,
“যিনি এই এলাকার নির্বাচিত বিধায়ক, তিনি এখন জেলার সভাধিপতি। তিনি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, রাস্তার কাজ শেষ হয়ে গেছে। তাহলে মানুষের ক্ষোভ কেন? মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করা হচ্ছে।”
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সদস্য মৃণাল দাস দাবি করেন,
“১২ কিমি রাস্তা হয়ে গেছে। বাকি ৬ কিমি রাস্তা পিচ হবে না ঢালাই, এই নিয়েই গ্রামের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। সে কারণেই দেরি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই একটা সমাধান সূত্র পাওয়া গেছে, দ্রুতই কাজ শুরু হবে।”
প্রশ্ন উঠছে :
কেন ১২ বছরেও রাস্তার সমস্যা মেটানো গেল না?
প্রশাসনের আশ্বাস বারবার অকার্যকর কেন?
একটানা অবরোধ, লিখিত অভিযোগ সত্ত্বেও উন্নয়ন থমকে কেন?
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, “এবার আর কাউকেই ভোট দেব না। যতদিন না রাস্তা হয়, ততদিন কোনও নেতা এখানে পা রাখলে গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করবেন।”
আরও পড়ুন :