Jadavpur Presidency UGAdmission2025
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ২৬ জুলাই ২০২৫ : পশ্চিমবঙ্গের দুই বিখ্যাত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান—যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। একসময় যেখানে ভর্তি হতে হলে কয়েক হাজার আবেদনপত্রের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতো, সেখানে ২০২৫ সালের বর্ষে দেখা যাচ্ছে এক ভিন্ন চিত্র । আবেদন সংখ্যা নেমে এসেছে আশঙ্কাজনকভাবে (Jadavpur Presidency UGAdmission2025), যা শুধু সংখ্যার হিসাবে নয়, মানসিকতা ও শিক্ষানীতির প্রতিফলন হিসেবেও বড় ইঙ্গিতবাহী।
কোথায় দাঁড়িয়ে আছে সংখ্যা?
বাংলা অনার্স: ২০২৪ সালে আবেদন ছিল ৪০৬টি, ২০২৫-এ কমে দাঁড়িয়েছে ২৯০।
ইংরেজি অনার্স: ২৪০৬ থেকে কমে হয়েছে ১৭৫৬।
রসায়ন বিভাগ: ১২৮৬ → ৯২৬
গণিত বিভাগ: ১৮৩৫ → ৯৫৪
এই বিশ্ববিদ্যালয়েও কলা ও বিজ্ঞান বিভাগের একাধিক বিষয়ে ১০–২০% আবেদন হ্রাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষত বাংলা, দর্শন, ইতিহাস ও পরিসংখ্যান বিষয়ে ভর্তির আগ্রহ কমছে।
কেন এই ভাটার টান?
এই বছর যাদবপুরে অনার্স ভর্তি শুরুতেই বিলম্ব ঘটে। কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের OBC তালিকা স্থগিত করে দেওয়ায় ভর্তি পদ্ধতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। অনেকেই তখন অন্য কলেজে ভর্তি হয়ে যান, ফলে JU-তে আবেদন কমে।
প্রতিষ্ঠান দুটি মূলত মানবিক ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষায় সুপরিচিত। কিন্তু বাংলা, ইতিহাস বা দর্শনের মতো বিষয়ে এখন চাকরির সুযোগ অপ্রতুল। সেই সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি ও দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের মধ্যে ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়েছে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সুবিধা, দ্রুত ভর্তি, ইংরেজি মাধ্যম, ও চাকরি-উন্মুখ পদ্ধতির কারণে অনেক অভিভাবক ও ছাত্র ছাত্রী ঐ দিকেই ঝুঁকছেন। JU বা প্রেসিডেন্সির তুলনায় এসব জায়গায় ক্যারিয়ার পথ “দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য” বলে বিবেচিত হচ্ছে।
নতুন শিক্ষানীতির আওতায় চার বছরের স্নাতক কোর্স চালু হয়েছে। JU-তে তা এখন বাধ্যতামূলক। কিন্তু অনেক পড়ুয়া এই লম্বা সময়ের পাঠ্যক্রমে আগ্রহী নয়। তারা তিন বছরের B.A/B.Sc বেছে নিচ্ছে অন্যত্র।
কী বলছেন অধ্যাপক ও পড়ুয়ারা?
রাজেশ্বর সিনহা, অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, JU:
“স্কুল-কলেজে নিয়োগ না থাকলে ছাত্ররা বাংলা বা ইতিহাস পড়তে চাইবে কেন? আমরা বারবার বলছি, নিছক ডিগ্রির চাইতে ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দরকার।”
ইমন লাহিড়ি, JU-র প্রাক্তন ছাত্রনেতা ও গবেষক:
“ব্র্যান্ড JU এখনও আছে, কিন্তু চাকরি নেই। চার বছরের পড়াশোনা করে বেরিয়ে গেলে কী হবে—এই প্রশ্নটাই এখন মুখ্য হয়ে উঠছে।”
পার্থ প্রতিম রায়, JU শিক্ষক সমিতি:
“NEP চালু করতে গিয়েও সমস্যা হয়েছে। পরিকল্পনা ছাড়াই বাস্তবায়নের ফলে পড়ুয়ারা দ্বিধায় পড়েছে।”
জেএনইউ-তে যৌন হেনস্থার অভিযোগে অধ্যাপক বরখাস্ত, আরও তিন অধ্যাপকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা
যাদবপুরে ‘আজাদ কাশ্মীর’ পোস্টারে প্রথম গ্রেপ্তার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র সৌম্যদীপ
উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ কোথায়?
এই প্রবণতা নিছক JU বা প্রেসিডেন্সি-র অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়—এটা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে এক বড় প্রশ্নচিহ্ন। রাজ্যে শিক্ষার মানকে স্বীকৃতি দেয় NIRF, Nature Index-এর মতো সংস্থা, তবু ছাত্রছাত্রীরা অন্য বিকল্প খুঁজছে।
সরকারি নিয়োগ, কোর্সের আপডেট, এবং ক্যারিয়ার সহায়ক পরিকাঠামো না থাকলে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা একটা দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পড়বে।
আরও পড়ুন :
৩১ জুলাই পুজো কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী, বাড়তে পারে অনুদানের অঙ্ক
শেষমেশ নিষেধাজ্ঞার কবলে লিওনেল মেসি ও জর্দি আলবা — অলস্টার ম্যাচে না খেলায় শাস্তি এমএলএসের