Breaking News

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা প্রশ্ন: “আপনারা কি চান আগে গ্রেফতারি, নাকি বন্যা মোকাবিলা?”

উত্তরবঙ্গের বন্যা নিয়ে রাজনীতির আগুন জ্বলছে। শুভেন্দু অধিকারীর তীব্র সমালোচনার জবাবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা প্রশ্ন তুললেন—“মানুষের জীবন বাঁচানোই কি এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নয়?”

শুভেন্দুকে পাল্টা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: “আগে গ্রেফতারি, না বন্যা মোকাবিলা?”

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য

ক্লাউড টিভি ডেস্ক: উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি ও বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর উপর হামলার ঘটনাকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে ফের চরম উত্তেজনা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি এই ঘটনাকে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার চরম অবনতি হিসেবে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। আর সেই মন্তব্যের পরই মুখ খোলেন তৃণমূল সাংসদ ও আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “এই মুহূর্তে রাজ্যের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত বন্যা মোকাবিলা, রাজনৈতিক প্রতিশোধ নয়।”

কলকাতা এয়ারপোর্টে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,

“আপনারা কি চান আগে গ্রেফতারি হোক, নাকি মানুষকে উদ্ধার করা হোক? বন্যায় মানুষ বিপন্ন, প্রশাসন মাঠে নেমে কাজ করছে—এই সময় রাজনীতি করা মানে বিপর্যয়কে হাস্যকর বানানো।”

শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ ছিল, উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় প্রশাসন ব্যর্থ, এবং এই পরিস্থিতিতে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর ওপর হামলা আসলে ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস’-এরই প্রতিফলন। কিন্তু কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপি চায় যেকোনো ঘটনার মধ্যেই রাজনীতি খুঁজে বের করতে। যারা কেন্দ্র থেকে ত্রাণ বরাদ্দে কৃপণতা দেখাচ্ছে, তাদের মুখে মানবিকতার কথা মানায় না।”

তিনি আরও যোগ করেন, “বন্যায় ঘরছাড়া হাজার হাজার মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী নিজে পরিস্থিতি মনিটর করছেন। একদল মানুষ যখন দুর্গতদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, তখন শুভেন্দু বাবুরা মঞ্চ সাজিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছেন। সেটাই ওদের রাজনীতি।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য শুধু বিরোধী দলের সমালোচনা নয়, বরং রাজ্যের বর্তমান সংকটকালে রাজনৈতিক অগ্রাধিকারের প্রশ্নও উত্থাপন করেছে। বিশেষত, শুভেন্দু অধিকারীর সাম্প্রতিক টোনে রাজ্য প্রশাসনের প্রতি ‘আক্রমণাত্মক ভাষা’-র জবাবে কল্যাণের বক্তব্যে একধরনের ‘নৈতিক প্রতিরোধ’ প্রকাশ পেয়েছে।

তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানাচ্ছে, উত্তরবঙ্গের বন্যা মোকাবিলায় রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠিয়েছে। একইসঙ্গে বিজেপি নেতাদের মন্তব্যকে “উস্কানিমূলক” বলে অভিযুক্ত করছে তৃণমূল শিবির।

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা: তৃণমূল কংগ্রেসে অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েনের ইঙ্গিত

“আমাকে আবারও সাসপেন্ড করা হয়েছে। সেনার হয়ে বলার জন্য সাসপেন্ড হতে হয়েছে। আমি সেনার জন্য গর্ব অনুভব করি।” : শুভেন্দু

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “বিজেপি যদি সত্যিই মানুষের পাশে থাকতে চাইত, তাহলে আজ রাজ্য সরকারকে আক্রমণ না করে সহযোগিতা করত। কিন্তু ওরা রাজনীতিতে মত্ত, মানবিকতায় নয়।”

এই বক্তব্য ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, রাজনৈতিক ঝড়ের মধ্যেও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষা তুলনামূলকভাবে সংযত, আবার কেউ মনে করছেন, এই বক্তব্যে বিরোধী দলনেতাকে উদ্দেশ্য করে অপ্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বন্যা পরিস্থিতি যতই গুরুতর হোক, তাতে রাজ্যের দুই প্রধান দলের মধ্যে ‘বক্তব্য-যুদ্ধ’ আরও তীব্র হতে চলেছে।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য হয়তো সেই সংঘাতের নতুন পর্বের সূচনা মাত্র।

আরও পড়ুন :

পাকিস্তানে জাফর এক্সপ্রেসে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, ছয়টি কোচ বেলাইন — নিরাপত্তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন

মুখ্যমন্ত্রী কে ক্লাস সেভেনের ভুগোল বই পড়ার পরামর্শ দিলেন শুভেন্দু অধিকারী

ad

আরও পড়ুন: