Breaking News

KalyanBanerjee TMCCrisis

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা: তৃণমূল কংগ্রেসে অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েনের ইঙ্গিত

কল্যাণের অভিযোগ, সহ-সাংসদ মহুয়া মৈত্র তাঁর বিরুদ্ধে অমানবিক ভাষা ব্যবহার করেছেন—অন্য MPs-কে ‘শূকরশাবক’ বলা বিষয়ে কল্যাণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বললেন, দলের কেউ সেই মন্তব্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি বরং নিজেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

KalyanBanerjee TMCCrisis: Political Turmoil Unveiled %%page%% %%sep%% %%sitename%%

KalyanBanerjee TMCCrisis

ক্লাউড টিভি বাংলা ডেস্ক | ৪ আগস্ট ২০২৫ : তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ সাংসদ ও সাংসদীয় দলের লোকসভা চিফ হুইপ পদে থাকা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (KalyanBanerjee TMCCrisis) আচমকাই ইস্তফা দিলেন। এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি সাংগঠনিক পরিবর্তন নয়, বরং দলীয় অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েনের বহিঃপ্রকাশ বলেই বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন। ইস্তফা দেওয়ার পর কল্যাণের একাধিক বক্তব্য স্পষ্ট করে দিল, তিনি নিজের অপমান বোধ করছেন এবং দলে এক ধরনের ‘বিচারহীনতা’র শিকার হয়েছেন বলে মনে করেন।

লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল কংগ্রেস দলীয় সাংসদদের নিয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক আয়োজন করেন মুখ্যমন্ত্রী ও দলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন যে, তৃণমূলের লোকসভা সদস্যদের মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই, সাংসদরা নিয়মিত সংসদে উপস্থিত থাকেন না এবং দলের কাজকর্মে উদাসীনতা রয়েছে। এই কথা বলার সময় চিফ হুইপ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে সরাসরি ইঙ্গিত করেন তিনি।

এই প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন,
“যে ভুলটা হয়েছে, তা তো সকলের। কিন্তু দায় চাপানো হল শুধু আমার ওপরে। মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্য আমাকে চরমভাবে আঘাত করেছে। আমি বহু বছর ধরে দলের সঙ্গে আছি, আজ যদি আমাকে ব্যর্থ বলে মনে হয়, তাহলে দায়িত্বে থাকাটাই অবাঞ্ছিত।”

কল্যাণের ইস্তফা শুধু সাংগঠনিক অপমানবোধ নয়, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তাঁর সহ-সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। একাধিক সূত্রের দাবি, লোকসভার ভেতরে এবং বাইরে মহুয়া মৈত্র অনেকসময় হুইপ বা অন্য নেতাদের গুরুত্ব না দিয়ে একক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এছাড়া একবার লোকসভার বৈঠকে উপস্থিত অন্য সাংসদদের উদ্দেশে মহুয়া ‘পিগলেট’ বা ‘শূকরশাবক’ বলেছিলেন বলে অভিযোগ, যা কল্যাণ প্রকাশ্যে তুলেছেন।

তিনি বলেন,
“দল কি এখন এতটাই নিচে নেমে গেছে, যেখানে একজন মহিলা সাংসদ সহকর্মীদের নিয়ে এই ভাষা ব্যবহার করতে পারেন? কেউ কিছু বলে না, অথচ আমি যখন প্রতিবাদ করি, তখন আমাকেই দোষী করা হয়।”

কল্যাণের ইস্তফা দেওয়ার পরপরই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ফোন করেন। সূত্রের খবর, অভিষেক কল্যাণকে বলেন,
“আপনি এখনই দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন না। আমি দিল্লি এসে আপনার সঙ্গে আলোচনা করব।”
কল্যাণ জানান, অভিষেকের কথাতেই আপাতত কিছুদিন সময় নিচ্ছেন, তবে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নন।

এই ঘটনার পরে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—তৃণমূল কংগ্রেস কি এখন এক নতুন রূপান্তরের পথে? বর্ষীয়ান নেতাদের গুরুত্ব কমে গিয়ে, নবীন নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টায় কি অবচেতনভাবেই দল বিভক্ত হচ্ছে?

প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে পুলিশকে বোমা মারার নিদান দিয়েও পার পেয়েছিলেন, এখন কেন কোপে কেষ্ট

বিহারে প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা, কোন রাজনৈতিক দলের আপত্তি নেই: জানাল নির্বাচন কমিশন

বিশ্লেষকদের মতে, কল্যাণের মতন একজন প্রবীণ আইনজীবী ও দীর্ঘকালীন সাংসদ যদি অপমানিত বোধ করেন, তাহলে দলের মধ্যে গণতান্ত্রিক পরিসর সংকুচিত হচ্ছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। বিশেষ করে, যখন এক তরুণ সাংসদ মহুয়া মৈত্রের মতো ব্যক্তির কথাবার্তা দলের অভ্যন্তরে বিভাজন তৈরি করছে।

তৃণমূল কংগ্রেস এখনও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেনি। দলের মুখপাত্ররা বলছেন, “এটি একটি অর্গানাইজেশনাল ইস্যু, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ আলোচনা চলছে। সব সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে মেটানো হবে।”

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা শুধু একটি পদ ত্যাগ নয়। এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দলের অভ্যন্তরে ক্ষোভ, অসন্তোষ ও এক নতুন শ্রেণিগত সংঘাত তৈরি হচ্ছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন নতুন তরুণ নেতৃত্ব ও মমতার পুরোনো বিশ্বস্তদের মধ্যে এই দূরত্ব দলকে আগামী দিনে আরও বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।

আরও পড়ুন :

লর্ডস থেকে ওভাল: সিরাজের বিস্ময়কর প্রত্যাবর্তন, পরাজিত ব্রিটিশ। ওভাল যেন পলাশী 2.0

বিহারে প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা, কোন রাজনৈতিক দলের আপত্তি নেই: জানাল নির্বাচন কমিশন

ad

আরও পড়ুন: