Kankalitala ShivaDevotees
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : বীরভূম জেলার আধ্যাত্মিক ও ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের অন্যতম কেন্দ্র কঙ্কালীতলা, যা হিন্দুদের ৫১টি শক্তিপীঠের মধ্যে একটি। এই পীঠ মন্দিরে শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবারে (Kankalitala ShivaDevotees) প্রতিবছর শিবভক্তদের ঢল নামে। সোমবার সকাল থেকেই এ বছরও হাজার হাজার ভক্ত মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন জল ঢালার ব্রত পালন করতে।
কঙ্কালীতলা শুধু ধর্মীয় কারণে নয়, সাংস্কৃতিক ও লোকবিশ্বাসের কারণেও বিখ্যাত। বিশ্বাস করা হয়, দেবী সতীর কঙ্কালখণ্ড এখানে পতিত হয়েছিল এবং এখানেই শিব মহাদেব তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন। এই বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই বহু যুগ ধরে শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার বিশেষ তাৎপর্য বহন করে আসছে।
কিশোরভারতীতে লাল-হলুদ ঝড়, এয়ারফোর্সকে হাফডজন গোল দিল ইস্টবেঙ্গল
আজ ভোরের আলো ফুটতেই ভক্তরা কঙ্কালীতলার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ সাইকেলে, কেউবা গাড়িতে চেপে আসে, তবে উদ্দেশ্য এক—মহাদেবের পাদপদ্মে জল ঢেলে আশীর্বাদ প্রাপ্তি। মন্দির প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য সকাল থেকেই লম্বা লাইন দেখা যায়। ভক্তরা হাতে গঙ্গাজল, ফুল, ধূপ-ধুনো নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন এবং পূজা অর্চনা সম্পন্ন করেন।
পূজা দেওয়ার পর ভক্তরা মন্দির সংলগ্ন পবিত্র স্থান থেকে জল সংগ্রহ করেন। অনেকে এই জল নিজেদের গৃহস্থালি পূজো বা অন্য মন্দিরে শিবলিঙ্গে নিবেদন করার জন্য নিয়ে যান। কঙ্কালীতলার জলকে শুদ্ধ ও শক্তিশালী বলে বিশ্বাস করা হয়।
হাজার হাজার ভক্তের জন্য মন্দির কমিটি ও স্থানীয়দের উদ্যোগে প্রসাদের বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। খিচুড়ি, লাবড়া, চাটনি ও মিষ্টি পরিবেশন করা হয় ভক্তদের হাতে। দুপুরের দিকে প্রসাদ বিতরণের সময়ও ভক্তদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
মন্দির চত্বরে স্বেচ্ছাসেবকরা শৃঙ্খলা রক্ষা ও ভক্তদের সুরক্ষায় কাজ করেন। প্রসাদ গ্রহণের জন্যও আলাদা লাইন ছিল, যাতে ভিড়ের কারণে কোনো বিশৃঙ্খলা না ঘটে।
ভক্ত সমাগমের কথা মাথায় রেখে জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। মন্দিরের আশেপাশে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ছিল পুলিশ মোতায়েন। স্বাস্থ্য শিবিরও ছিল, যেখানে প্রয়োজনে ভক্তরা চিকিৎসা সহায়তা পেয়েছেন।
এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ। এছাড়াও কংকালী অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের বহু নেতা-নেত্রী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজকর্মীরা মন্দির প্রাঙ্গণে এসে ভক্তদের সঙ্গে সময় কাটান।
শুধু পূজা-অর্চনাই নয়, এই দিনটি বীরভূমের মানুষের কাছে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনমেলারও দিন। দূরদূরান্ত থেকে আত্মীয়-স্বজনরা আসেন, পরিচিতদের সঙ্গে দেখা হয়, গল্পগুজব হয়, স্থানীয় ব্যবসায়ীদেরও ভালো রোজগার হয়। মন্দিরের আশেপাশের দোকানপাট, খাবারের স্টল এবং ফুলের দোকানেও জমে ওঠে বেচাকেনা।
ধর্মীয় আবহ, ভক্তি আর সামাজিকতার মিশেলে কঙ্কালীতলার শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার বীরভূমবাসীর কাছে বছরের অন্যতম স্মরণীয় দিন হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন :
বলিউডের রূপসী থেকে ভারতের অন্যতম ধনী অভিনেত্রী হওয়ার পথে
মুক্তির আগেই বাজিমাত রজনীকান্তের ‘কুলি’, বক্স অফিসে রেকর্ড অগ্রিম বিক্রি