ক্লাউড টিভি ডেস্ক : কলকাতা শহরে এবার থেকে সাইনবোর্ড বাংলায় লেখা বাধ্যতামূলক হলো। কলকাতা কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জারি করা নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শহরের প্রতিটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে তাদের নামফলক বাংলায় লিখতে হবে। শুধু লিখলেই হবে না, এমনভাবে বসাতে হবে যাতে দূর থেকেও তা স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল যে, শহরের অনেক দোকান, অফিস, হাসপাতাল, ডায়গনস্টিক সেন্টার কিংবা রেস্তোরাঁর সাইনবোর্ড শুধুমাত্র ইংরেজিতে লেখা থাকে। অথচ কলকাতার অধিকাংশ মানুষই বাংলাতেই কথা বলেন ও লেখেন। ফলে স্থানীয় ভাষায় নির্দেশনা বা নামফলক না থাকায় সাধারণ মানুষ অনেক সময় সমস্যায় পড়েন। জনস্বার্থে তাই এবার কঠোর পদক্ষেপ নিল কলকাতা পৌরসভা।
“রাজ্যের স্কুলে বাধ্যতামূলক মুখ্যমন্ত্রীর বই! সাহিত্য না প্রচার? শিক্ষা মহলে বিতর্ক তুঙ্গে”
নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এন চন্দ্রশেখরনের বৈঠক: বাংলায় টাটার বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত
শনিবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে পৌরসভার পক্ষ থেকে সরাসরি সাইনবোর্ড খুলে ফেলা হতে পারে। পৌরসভার অনুমতি নিয়ে চালানো প্রায় ৪৫ হাজার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে কলকাতায়। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকেই ইতিমধ্যে আলাদা চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম গত কয়েক মাস ধরেই বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বারবার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন যে, শহরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বাংলায় সাইনবোর্ড বসাতে বাধ্য থাকবেন। এবার সেই সতর্কতা কার্যকর করতে আনুষ্ঠানিক নির্দেশ জারি করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য নয়, বরং সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্যও। কারণ বহু মানুষ চিকিৎসা, কেনাকাটা বা অন্যান্য কাজে কলকাতায় আসেন। কিন্তু বাংলাভাষী মানুষের পক্ষে শুধুমাত্র ইংরেজি লেখা বোঝা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই স্থানীয় ভাষায় নামফলক দেওয়া জনস্বার্থে জরুরি বলে মনে করছে পৌরসভা।
শহরের দোকানদারদের অনেকেই ইতিমধ্যেই বাংলায় নতুন সাইনবোর্ড তৈরির কাজ শুরু করেছেন। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির একাংশ এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, স্থানীয় ভাষায় লেখা থাকলে গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। তবে অন্যদিকে কিছু ব্যবসায়ী মনে করছেন, একসঙ্গে সব সাইনবোর্ড বদলাতে খরচের বোঝা চাপবে।
ভাষাতত্ত্ববিদদের মতে, শহরের সরকারি স্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার আরও জোরদার হলে তা সাংস্কৃতিক পরিচয়কে শক্তিশালী করবে। পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ভাষা বাংলা হলেও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ইংরেজির প্রভাব তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। তাই বাংলায় নামফলক বাধ্যতামূলক করলে ভাষার মর্যাদা রক্ষা পাবে।
এখন দেখার বিষয়, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো কত দ্রুত এই নির্দেশ মেনে চলে। কারণ ৩০ সেপ্টেম্বরের পর পৌরসভা অভিযানে নামলে ব্যবসায়ীদের জন্য তা বড় সমস্যার কারণ হতে পারে।
আরও পড়ুন :
ভয়াবহ গণআন্দোলন, সেনা মোতায়েন – নিহত অন্তত ১৯ : অবশেষে নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যান প্রত্যাহার
নেপালে উত্তাল তরুণ প্রজন্ম: সংসদ চত্বরে পুলিশের গুলি, নিহত অন্তত ১