Kolkata EastWestMetro Privatization
ক্লাউড টিভি ডেস্ক | ২৫ জুলাই ২০২৫ : কলকাতার অন্যতম ব্যস্ত ও অত্যাধুনিক মেট্রো প্রকল্প ‘ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো’র ভবিষ্যৎ ঘিরে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি। ভারতীয় রেলওয়ের অধীনে পরিচালিত এই রুটে বেসরকারি অংশীদারিত্বে পরিচালনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি এক EOI (Expression of Interest) প্রকাশ করেছে, যেখানে পরিষেবা পরিচালনার জন্য বেসরকারি সংস্থার আগ্রহ আহ্বান করা হয়েছে (Kolkata EastWestMetro Privatization)।
কী রয়েছে আগ্রহপত্রে?
মেট্রো কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত আগ্রহপত্রে বলা হয়েছে, তারা এমন সংস্থার খোঁজ করছেন যারা ট্রেন পরিচালনা, যাত্রীসেবা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নে অংশ নিতে প্রস্তুত। এই আগ্রহপত্রের আওতায় মূলত চালানো ও রক্ষণাবেক্ষণ (O&M) অংশেই বেসরকারি সংস্থার ভূমিকা নির্ধারিত হবে।
৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সংস্থাগুলিকে আবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপরে একটি মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংস্থা নির্বাচিত হবে, এবং তারপরেই মূল চুক্তির আলোচনা শুরু হবে।
বেসরকারি স্কুলগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে চলেছে রাজ্য সরকার : শিক্ষামন্ত্রী – BRATYA BASU
️ ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো: এক নজরে
রুট: হাওড়া ময়দান ↔ সল্টলেক সেক্টর ৫
মোট দূরত্ব: প্রায় ১৬.৬ কিলোমিটার
অন্যতম বৈশিষ্ট্য: গঙ্গার নিচ দিয়ে সাবওয়ে টানেল, যা দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ নদী-পারাপার মেট্রো সিস্টেম।
বর্তমানে অংশিক পরিষেবা চালু রয়েছে (সেক্টর ৫ ↔ শিয়ালদহ), হাওড়া অংশ এখনো উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ কী বলছে?
মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, এই আগ্রহপত্র মানেই পুরোপুরি বেসরকারিকরণ নয়। বরং, এটি একটি “পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP)” মডেল, যেখানে সরকারি নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকবে কিন্তু দক্ষতা ও পরিষেবা উন্নয়নের জন্য বেসরকারি সংস্থার সহায়তা নেওয়া হবে।
তবে এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে মন্ত্রী বা কেন্দ্রীয় রেল দফতরের পক্ষ থেকে সরাসরি প্রতিক্রিয়া আসেনি।
উদ্বেগ ও সমালোচনা
এই ঘোষণার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া ও যাত্রীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকে আশঙ্কা করছেন, ভাড়া বাড়তে পারে, পরিষেবায় বাণিজ্যিক মনোভাব আসতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে জনসাধারণের উপর বোঝা বাড়তে পারে।
অন্যদিকে, অনেক পরিবহণ বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলা এই প্রকল্পে আধুনিক প্রযুক্তি ও পেশাদার ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন রয়েছে। সেখানে বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণ নতুন দিশা দেখাতে পারে।
আগ্রহপত্রের সম্ভাব্য লক্ষ্য
কার্যকারিতা বাড়ানো: রক্ষণাবেক্ষণে দক্ষতা ও নির্ভরযোগ্যতা আনার মাধ্যমে সময়ানুগ পরিষেবা নিশ্চিত করা।
যাত্রীসেবা উন্নয়ন: আধুনিক টিকিটিং, স্মার্ট কার্ড, অ্যাপ নির্ভর সেবা চালু করা।
আর্থিক ভারসাম্য রক্ষা: সরকারিভাবে দীর্ঘমেয়াদে অপারেশনাল খরচ কমানো।
এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে কলকাতার নাগরিক যাতায়াত ব্যবস্থায় একটি বড় মোড় ঘোরাতে চলেছে। কিন্তু এটি কতটা সুফল বয়ে আনবে, আর কতটা জনস্বার্থ রক্ষা করতে পারবে—তা নির্ভর করবে আগ্রহপত্রের বাস্তবায়ন ও চুক্তির প্রকৃত কাঠামোর উপর। এখন অপেক্ষা ৩১ জুলাইয়ের পরবর্তী ঘোষণার।
আরও পড়ুন :
ম্যাককালামের রেকর্ড ভেঙে ইতিহাস গড়লেন আয়ুশ মাহাত্রে, যুব টেস্টে দ্রুততম সেঞ্চুরিতে তৃতীয়