Kolkata MedicalCollege Election 2025
কলকাতা, ৩ জুন ২০২৫ : আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীর মৃত্যুকে ঘিরে ২০২৪ সালের অন্যতম আলোড়ন সৃষ্টি করা আন্দোলনের দুই মুখ, ডা. দেবাশিস হালদার ও ডা. অনিকেত মাহাতো এবার মুখোমুখি হলেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়—ছাত্র সংসদ নির্বাচনে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংসদের জন্য অনুষ্ঠিত নির্বাচন(Kolkata MedicalCollege Election 2025)রাজ্যের মেডিক্যাল মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। আন্দোলনের মঞ্চে একসাথে লড়া এই দুই চিকিৎসক এখন দুই ভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
সোমবার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে কলেজের প্রায় এক হাজার ভোটারের মধ্যে ৮০০-এরও বেশি ছাত্রছাত্রী ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ফলাফল অনুযায়ী, মেডিক্যাল কলেজ ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (MC-DSA) ১৭টি আসনে জয়লাভ করে। অনিকেত মাহাতো যে সংগঠন ডিএসও (DSO)-র প্রতিনিধি, তারা পায় একটি মাত্র আসন। বাকি দুটি আসনে নির্দল প্রার্থীরা বিজয়ী হন।
এই নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংসদের পূর্ণাঙ্গ গঠনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP) ও সিপিএম ঘনিষ্ঠ এসএফআই (SFI) এবারের নির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি, ফলে মূল প্রতিযোগিতা হয় MC-DSA, DSO ও নির্দলদের মধ্যে।
ডা. দেবাশিস হালদার বলেন, “আমরা ছাত্রদের স্বার্থে কাজ করতেই আন্দোলনে নেমেছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই ছাত্র রাজনীতিতে এসেছি। ছাত্রছাত্রীদের অধিকারের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাব, দলীয় রঙের ঊর্ধ্বে উঠে।”
অন্যদিকে ডা. অনিকেত মাহাতো জানান, “আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক পার্থক্য থাকলেও উদ্দেশ্য এক—কলেজে স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র ও জবাবদিহি ফিরিয়ে আনা। আন্দোলন যেমন ছিল সম্মিলিত, গণতন্ত্রের এই মঞ্চেও আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আছে।”
দুজনেই মেনে নিচ্ছেন যে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে কাজ করা জরুরি, এবং সেখানে মতবিরোধ থাকলেও সম্মান বজায় রাখতে হবে।
TMCP বা SFI-এর মতো পুরনো ছাত্র সংগঠনের অনুপস্থিতি রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষত ২০২৪ সালের আরজি কর-কাণ্ডের পর তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ছাত্র সংগঠনগুলি অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। সেসময় মেডিক্যাল কলেজে TMCP-এর একটি ইউনিট খোলা হলেও আন্দোলনের চাপে তা বিলুপ্ত হয়ে যায়।
উচ্চমাধ্যমিকে পাশের হার সর্বোচ্চ, ফল প্রকাশের ৫০ দিনের মধ্যেই নজিরবিহীন ঘোষণা
WestBengal Board Results 2025 : মেধাতালিকায় এবারও কলকাতাকে টেক্কা দিল জেলা
MC-DSA এবং DSO-এর উত্থান মূলত আন্দোলনের মাধ্যমেই হয়েছে। তবে এখন ছাত্রদের প্রত্যাশা, এই দুই সংগঠন ভবিষ্যতে ছাত্রদের শিক্ষা, আবাসন, চিকিৎসা পরিকাঠামো ও নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কাজ করবে।
অনেক ছাত্রছাত্রী মনে করছেন, যাঁরা রাজপথে আন্দোলনের সামনে ছিলেন, তাঁদের দায়িত্ব আরও বড়। একজন তৃতীয় বর্ষের ছাত্র বলেন, “এই নেতারা যদি সত্যিই সেই আদর্শ নিয়ে ছাত্র সংসদ চালান, তাহলে মেডিক্যাল কলেজের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।” অনেকে আশা করছেন, হাসপাতালের পরিকাঠামো, নার্সিং হোস্টেলের নিরাপত্তা, রাতের ডিউটির সময় মহিলাদের সুরক্ষা—এসব বিষয় এবার ছাত্র সংসদের আলোচনায় আসবে।
আরও পড়ুন :
পায়রা বিষ্ঠা ও ধূলিকণার স্বাস্থ্যঝুঁকি : দিল্লি তে জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালে শুনানি
১৭ বছরের অপেক্ষার করা বিরাট নাকি প্রীতি জিনটা ? কে হবে আগামীকাল আইপিএল নতুন চ্যাম্পিয়ন