MaldaFloods
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : মালদায় ফের বন্যার পরিস্থিতি। প্রবল স্রোত ও অতিবৃষ্টির জেরে গঙ্গা ও ফুলহর নদীর জলস্তর বর্তমানে চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এর ফলে জেলার রতুয়া-১নং ব্লকের মহানন্দাটোলা ও বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন (MaldaFloods) হয়ে পড়েছে।
সরকারি হিসাবে, দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে ১০-১১টি বুথ এলাকা বর্তমানে বন্যার কবলে। তবে স্থানীয়দের দাবি, জলমগ্ন বুথের সংখ্যা এর চেয়েও বেশি। মহানন্দাটোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বন্ধুটোলা, রাজকিশোরটোলা, জগবন্ধুটোলা, বোধনটোলা, সম্বলপুর, গোবিন্দপুর এবং পশ্চিম রতনপুর এলাকায় জল ঢুকে পড়েছে।
অন্যদিকে, বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম রতনপুর, টিকলিচর, খাচাবোনা ও নয়া বিলাইমারি অঞ্চলও জল থইথই অবস্থায়। মাঠ, রাস্তা, ঘরবাড়ি—সবই নদীর জলে তে ডুবে গেছে।
দ্রুতগতির ২০০ হেলিকপ্টার কিনছে ভারত: শেষ হতে চলেছে চেতক ও চিতা হেলিকপ্টারের যুগ
এলাকাবাসীর দাবি, এই দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে কয়েক হাজার মানুষ বর্তমানে বন্যার কবলে পড়েছেন। অনেকে নিজেদের ঘর ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়ি বা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। কিছু পরিবার মন্দির, স্কুল ও পঞ্চায়েত ভবনের মতো সরকারি স্থাপনায় অস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
চাষের জমি ও ফসলও জলের তলায় চলে গেছে। পাট, ধান ও শাকসবজির খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে চাষিদের ক্ষতির অঙ্ক দ্রুত বেড়ে চলেছে।
বন্যার জেরে বেশ কিছু রাস্তা ও কাঁচাপথ সম্পূর্ণ ডুবে যাওয়ায় যাতায়াত প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। নৌকা ছাড়া অনেক জায়গায় যাওয়া সম্ভব নয়। স্কুল ও স্থানীয় বাজারও কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।
বিশেষত বন্ধুটোলা ও রাজকিশোরটোলা এলাকায় জল এতটাই বেড়ে গেছে যে, ছোট নৌকা দিয়েই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
ব্লক প্রশাসন ও সিভিল ডিফেন্স ইতিমধ্যেই ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে শুকনো খাবার, পানীয় জল ও ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে যাতে বন্যাজনিত রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
এছাড়া, প্রশাসনের তরফে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। নদীর জলস্তর প্রতি ঘন্টায় মাপা হচ্ছে এবং সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত কয়েক দিনে উত্তরবঙ্গ ও পার্শ্ববর্তী বিহারে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় গঙ্গা ও ফুলহর নদীর জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। জলাধার ও বাঁধ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ার ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘমেয়াদি বাঁধ সংস্কার ও নদী খনন না হলে প্রতিবছরই এই ধরনের বন্যার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।
আরও পড়ুন :
শিয়ালদহ থেকে এসি লোকালের যাত্রা শুরু, ভাড়ার তালিকা প্রকাশ