Saltlake Gemstone Money Laundering
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: রাজধানী কলকাতার সল্টলেক আবারও কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার নজরে। বুধবার সকালে গ্রহরত্ন আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত এক এজেন্টের বাড়িতে ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)-এর দল তল্লাশি চালায়। অভিযোগ, এই এজেন্ট ও তাঁর সহযোগীরা গ্রহরত্ন আমদানি-রপ্তানির আড়ালে আর্থিক তছরুপ ও বিদেশে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। সূত্রের দাবি, অন্তত সাড়ে তিনশ কোটি টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে ভুয়ো লেনদেনের মাধ্যমে।
বুধবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ইডির অফিস থেকে আধিকারিকদের একটি দল রওনা হয় সল্টলেকের নির্দিষ্ট ঠিকানার দিকে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সিআইএসএফ (CISF)-এর জওয়ানরাও।
ইডি কর্মকর্তারা পৌঁছে সেখানকার গ্রহরত্ন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এজেন্টের বাড়ি ঘিরে ফেলেন। শুরু হয় টানা তল্লাশি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাড়ি থেকে প্রচুর নথিপত্র, কম্পিউটার হার্ডডিস্ক এবং বিদেশি রেমিট্যান্স সংক্রান্ত কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর সহযোগীরা গ্রহরত্ন আমদানি ও রপ্তানির নামে ভুয়ো চালান তৈরি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করতেন। এই অর্থ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দুবাই, হংকং এবং সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, মোট অর্থের পরিমাণ ৩৫০ কোটিরও বেশি।
কয়েক সপ্তাহ আগে ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স (DRI)-এর নজরে আসে এই লেনদেন। তারা সন্দেহজনক কিছু আমদানি-রপ্তানির নথি হাতে পায়, যেখানে দাম নির্ধারণে ব্যাপক গড়মিল দেখা যায়।ডিআরআই প্রাথমিকভাবে নথি যাচাইয়ের পর বিষয়টি ইডির কাছে হস্তান্তর করে।এরপর ইডি তদন্ত শুরু করে এবং বুধবারের তল্লাশি সেই তদন্তেরই অংশ বলে জানা গেছে।
তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, কলকাতা ও মুম্বাই বন্দর দিয়ে কয়েক বছর ধরে এই পাচার চলছিল।রপ্তানির তালিকায় নীলম, পুঁসপারাগ, রুবি, এমেরাল্ড প্রভৃতি দামি রত্নের নাম থাকলেও, প্রকৃতপক্ষে ওই চালানে ছিল নিম্নমানের পাথর বা একেবারেই খালি বাক্স।এইভাবে বিদেশি অ্যাকাউন্টে রপ্তানির ভুয়ো রেকর্ড তৈরি করে টাকা ট্রান্সফার করা হতো।তদন্তে আরও জানা গেছে, কিছু বিদেশি কোম্পানি এই চক্রের অংশ। তাদের সঙ্গে নিয়মিত ই-মেইল ও অনলাইন লেনদেনের প্রমাণও মিলেছে।
ED Raid: বালি পাচারের তদন্তে শেখ জহিরুল আলি বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়
রেলের বড় ঘোষণা: কনফার্ম টিকিটের তারিখ এখন থেকে অনলাইনে পরিবর্তন করা যাবে
ইডি সূত্রে খবর, শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের বাইরে আরও কয়েকটি শহরে এই চক্রের শাখা রয়েছে।মুম্বাই, সুরাট এবং হায়দরাবাদের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকেও নজরে রাখা হচ্ছে।এই প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে সল্টলেকের ওই এজেন্টের আর্থিক যোগাযোগের তথ্য মিলেছে বলে জানা গেছে।ইডি জানিয়েছে, তল্লাশির পর প্রয়োজনীয় প্রমাণ পেলে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা (PMLA) রুজু করা হবে।
অভিযান চলাকালীন পুরো এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, “সকাল থেকে এলাকা ঘিরে ফেলেছিল পুলিশ। প্রচুর অফিসার ছিল। কী হচ্ছে বুঝে উঠতে পারিনি।”
ইডির তরফে এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি, তবে সূত্রে খবর, এজেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে।
আরও পড়ুন :
আফগানিস্তানে আমেরিকান সেনা ঘাঁটি স্থাপনের বিরোধিতায় রাশিয়া, চীন, পাকিস্তানের সঙ্গী হল ভারত