Breaking News

Samik Bhattacharya

শমীক ভট্টাচার্য বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি: রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা, শিক্ষা ও দলে অবদান ঘিরে আশার আলো

যুক্তিনির্ভর, গঠনমূলক রাজনীতি, সাংবাদিক ও জনসাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য মুখ

Samik Bhattacharya: State President BJP, West Bengal%%page%% %%sep%% %%sitename%%

Samik Bhattacharya

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ভবিষ্যৎ সংগঠন ও নেতৃত্ব নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে, ঠিক সেই সময় উঠে এল এক পরিচিত মুখ—শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)। প্রাক্তন বিধায়ক, রাজ্যসভার বর্তমান সাংসদ এবং বহুদিনের মুখপাত্র হিসেবে বিজেপির অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, পরিশীলিত রাজনীতি ও গঠনমূলক বক্তব্যের জন্য পরিচিত এই নেতা এবার রাজ্য সভাপতির ভূমিকায় ।

কিছুদিন আগে, পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সমর্থনে পোস্টার পড়েছিল —যেখানে লেখা ছিল , “শমীক ভট্টাচার্যকে রাজ্য সভাপতি করুন, দলকে বাঁচান।” এই আন্দোলন অপ্রত্যাশিত হলেও অনেকেই বলছেন, এটি ‘ক্যাডারদের মুড’ স্পষ্ট করছে। যদিও শমীক নিজে এই ধরণের প্রকাশ্য প্রচারের বিরোধিতা করেছেন।

শমীক ভট্টাচার্য (Shamik Bhattacharya) একজন সুদীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নেতা, যিনি যুক্তিবাদী, পরিশীলিত ও অরাজনৈতিক বিতর্ক থেকে দূরে থাকার জন্য দলে আলাদা মর্যাদা পান।

  • জন্ম: ৫ নভেম্বর ১৯৬৩, কলকাতায়।

  • শিক্ষা: সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক পাশ (B.A., 1988)।

  • ছাত্রজীবন থেকেই আরএসএস ও জনসংঘ ঘনিষ্ঠতা—রাজনীতির পাঠ শুরু সেই সময় থেকেই।

  • পেশাগতভাবে বিভিন্ন শিক্ষা ও সমাজসেবামূলক কাজে যুক্ত থাকার পর তিনি বিজেপির সক্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন।

২০১৪ সালে বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে বিধায়ক হন। তখন রাজ্যে বিজেপি মাত্র কয়েকটি আসন পেয়েছিল, তাই তাঁর জয় রাজনৈতিক মহলে নজর কাড়ে। বিধানসভায় বিজেপির প্রথম সারির প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। পরে ২০২১ সালের নির্বাচনের পর তাঁকে দলের মুখপাত্র করা হয়। তাঁর বক্তব্য সর্বদাই পরিসংখ্যাননির্ভর, বুদ্ধিদীপ্ত এবং তুলনামূলকভাবে শালীন—যার কারণে তিনি সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের নজরে আসেন।

শমীক ভট্টাচার্যকে দীর্ঘদিন ধরে দলের ‘বিশ্বাসযোগ্য মুখ’ হিসেবে ধরা হয়। রাজ্যে যখনই রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে, তখনই তিনি সামনে এসে দলের পক্ষ ব্যাখ্যা দিয়েছেন—সংযত ভাষায়।

তিনি:

  • বিতর্ক থেকে দূরে থাকেন, দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলেন;

  • জনসংযোগে দক্ষ, বিশেষত উচ্চশিক্ষিত ও শহরাঞ্চলের ভোটারদের মধ্যে;

  • মিডিয়া ও সংবাদপত্রের সামনে যুক্তিনির্ভর যুক্তি তুলে ধরতে দক্ষ;

  • ২০২৪ সালে রাজ্যসভায় পাঠানো হয় তাঁকে, যা তাঁর ওপর দলের আস্থা প্রকাশ করে।

তিনি রাজ্যসভায় অর্থনৈতিক, বিদেশনীতি ও সংবিধান বিষয়ক আলোচনায় অংশ নিয়ে দলীয় ভাবধারা তুলে ধরেছেন আন্তর্জাতিক পরিসরেও।

মহারাষ্ট্রে যে ‘মোদিবিহীন’ ফর্মুলা কার্যকর হয়েছে, বাংলার ক্ষেত্রেও কি তেমনই ভাবছে গেরুয়া বাহিনী?

বঙ্গজয়ে বিজেপির ভরসা সেই হিন্দুত্ব-মমতা বিরোধিতায়, ২৬ এ চিড়ে ভিজবে?

সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানে ‘বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠন শমীক ভট্টাচার্যকে রাজ্য সভাপতি করার দাবি জানিয়ে পোস্টার লাগায়।
পোস্টারে লেখা ছিল:

“শমীক ভট্টাচার্যকে সভাপতি করুন, তবেই তৃণমূলকে হারানো যাবে।”

এই নিয়ে দলের অন্দরে গুঞ্জন ছড়ালেও শমীক নিজে এর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। তিনি (Shamik Bhattacharya) বলেন—
“যদি কেউ সাংগঠনিক পদ চান, তাহলে তাঁকে মাঠে পরিশ্রম করতে হবে, পোস্টার লাগিয়ে কিছু হয় না। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”

এই মন্তব্যে তাঁর শৃঙ্খলাবোধ ও সংগঠন-নির্ভর রাজনীতির বার্তা স্পষ্ট হয়। পোস্টার রাজনীতিকে ‘অনুশাসনবিরোধী’ বলে চিহ্নিত করে তিনি আরও বলেন—
“এটা দলের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা।”

শিক্ষিত, ইংরেজি-হিন্দি-বাংলায় সাবলীল শমীক রাজনৈতিক চর্চায় যুক্তিবাদকে প্রাধান্য দেন। সাংবাদিক সম্মেলনে বা টেলিভিশন বিতর্কে তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণের বদলে নীতি ও কার্যকারণ দিয়ে কথা বলেন—যা আজকের রাজনীতিতে বিরল।

তিনি স্বীকার করেন,

“রাজনীতি মানে স্রেফ বিরোধিতা নয়। সমালোচনাও গঠনমূলক হওয়া উচিত।”

শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠার কারণেই রাজনীতিতে তাঁর আবেগ নয়, যুক্তির জয় বরাবর স্পষ্ট।

বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব পরিবর্তনের গুঞ্জন চলছিলই। সুকান্ত মজুমদারকে নিয়ে দলের একাংশের অসন্তোষ, সংগঠনে শৃঙ্খলা, নির্বাচনে বারবার পরাজয়—এই প্রেক্ষাপটে শমীক ভট্টাচার্য একজন দক্ষ, বিতর্কহীন ও অভিজ্ঞ নেতারূপে উঠে এসেছেন।

২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি যদি একজন কার্যকর মুখ খোঁজে—যিনি একই সঙ্গে সংগঠন, মিডিয়া ও প্রশাসনিক স্তরে সমান দক্ষ, তাহলে শমীক হতে পারেন সেই বিকল্প।

রাজনীতির তীব্র প্রতিযোগিতায় কখনও কখনও শালীনতা ও যুক্তি হারিয়ে যায়। তবে শমীক ভট্টাচার্য (Shamik Bhattacharya) যেন সেই ব্যতিক্রম—যিনি ‘সুশীল রাজনীতির’ প্রতীক। তবে দলের মধ্যে ও বাইরে বহু মানুষের চোখ এখন তাঁর দিকেই। কারণ তিনি শুধু নেতা নন, তিনি হতে পারেন দলের ভিত মজবুত করার এক অন্যতম কারিগর।

আরও পড়ুন :

কারাবন্দিদের তালিকা বিনিময় করল পাকিস্তান ও ভারত: কূটনৈতিক যোগাযোগে বার্ষিক প্রক্রিয়া

বিশ্বজুড়ে কমছে খাদ্যের দাম, স্বস্তির ইঙ্গিত এফএওর

ad

আরও পড়ুন: