SamikBhattacharya UrbanFaceOfBJP
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি নির্বাচিত হলেন শমীক ভট্টাচার্য। কলকাতার রাজনীতি চেনা এই নেতাকে বেছে নেওয়ার পেছনে রয়েছে একাধিক কৌশলগত কারণ। প্রথমত, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন বাংলা দখলের নতুন কৌশল সাজাচ্ছে এবং শমীক সেখানে আদর্শ মুখ। তাঁর শহুরে ইমেজ (SamikBhattacharya UrbanFaceOfBJP , শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং রাজনৈতিক শালীনতা তাঁকে আলাদা করে তোলে।
বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব—বিশেষ করে সুনীল বনসাল ও জে.পি. নাড্ডার মতে—দলকে বাংলায় আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে গেলে এক জন বুদ্ধিজীবী প্রোফাইলের নেতার দরকার। সেই প্রোফাইলেই সবচেয়ে খাপ খাচ্ছেন শমীক। কলকাতার ভোটার, যারা সাধারণত বাম-তৃণমূল ঘরানার, তাদের কাছে বিজেপিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে একজন ‘ভদ্রলোক রাজনীতিক’-এর গুরুত্ব অপরিসীম।
‘কে হবেন বঙ্গ বিজেপির নতুন সভাপতি?’ – কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত ঘিরে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তেজনা
আরএসএস প্রচারকরা বিয়ে করেন না, সংগঠনটির প্রচারক ছিলেন মোদি, আদবানি ও বাজপেয়ীও
শমীক একসময়ে দলীয় মুখপাত্র ছিলেন, টেলিভিশন বিতর্কে ধারালো যুক্তি দিয়ে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমে তাঁর সাবলীলতা এবং মার্জিত আচরণ তাঁকে বিজেপির ‘উন্নত’ মুখ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তবে এই মনোনয়নের রাজনৈতিক অভিঘাতও গভীর। আগের সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ছিলেন উত্তরবঙ্গভিত্তিক নেতা। কিন্তু সেখানে বিজেপির সংগঠন আপাতভাবে মজবুত হলেও, দক্ষিণবঙ্গে তারা পিছিয়ে পড়ছিল। রাজ্যের রাজনীতিতে দক্ষিণবঙ্গ, বিশেষ করে কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চল, বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। তাই দল ভেবেছে, শহরের ভোটারদের মন পেতে গেলে একজন শহুরে মুখই একমাত্র ভরসা।
দলের একাংশের মতে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেও শমীকের সুসম্পর্ক এই মনোনয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শুভেন্দু এবং শমীক একসঙ্গে দলের কাজ সামলাতে পারবেন—এই ধারণা থেকেই শীর্ষ নেতৃত্বের আস্থা শমীকের উপর।
তবে এই সিদ্ধান্তে কিছু অস্বস্তিও রয়েছে। অম্বুজাক্ষ মোহান্তি নামের অপর এক নেতা মনোনয়ন জমা দিলেও, নিয়ম না মেনে করা হওয়ায় তা বাতিল হয়। দলের অনেকেই মনে করছেন, এই প্রক্রিয়া যদি আরও স্বচ্ছভাবে হত, তাহলে সমালোচনা এড়ানো যেত।
শমীক ভট্টাচার্য ২০১৪ সালে বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জয় পান, যা ছিল বিজেপির জন্য বড় সাফল্য। ২০১৬ সালের নির্বাচনে হেরে গেলেও তিনি দলের সঙ্গে থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি হিসেবে শমীকের সামনে এখন একাধিক চ্যালেঞ্জ। প্রথমত, দলীয় বিভাজন ও কোন্দল সামাল দেওয়া। দ্বিতীয়ত, দক্ষিণবঙ্গে সংগঠন মজবুত করা। তৃতীয়ত, দলের ভাবমূর্তি পাল্টে দেওয়া, যাতে বিজেপি বাঙালি মধ্যবিত্তের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।
দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “শমীককে সভাপতি করে বিজেপি বুঝিয়ে দিল, তারা এখন আর শুধুই সংঘশক্তির ওপর ভরসা করতে চায় না। তারা চাইছে কৌশলগত নেতৃত্ব।”
আরও পড়ুন :
শমীক ভট্টাচার্য বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি: রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা, শিক্ষা ও দলে অবদান ঘিরে আশার আলো
কমল বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম, কলকাতায় ৫৮ টাকার ছাড়—কিন্তু গৃহস্থের হেঁশেলে নেই স্বস্তি