সন্তোষপুর অগ্নিকাণ্ড
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : দক্ষিণ কলকাতার সন্তোষপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মুহূর্তে পুড়ে ছাই হয়ে গেল অন্তত ১২টি দোকান। সকালে সন্তোষপুর রেলস্টেশনের চত্বরেই এই ভয়াবহ আগুনের সূত্রপাত হয়। ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকা জুড়ে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রী ও স্থানীয় মানুষজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে স্টেশন সংলগ্ন একটি দোকান থেকেই প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রথমে দোকানের কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। দোকানগুলো দাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি থাকায় মুহূর্তেই আগুন ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। আশপাশের ঝুপড়ি এবং দোকানগুলোও আগুনে পুড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, “প্রথমে ভেবেছিলাম ছোটখাটো আগুন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই চারদিক আগুনের লেলিহান শিখায় ভরে গেল। দোকানের ভেতর থেকে কিছুই উদ্ধার করতে পারিনি। সব চোখের সামনে ছাই হয়ে গেল।”
খবর দেওয়া হলে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে পুরোপুরি আগুন নেভাতে সময় লাগে আরও কিছুটা। দমকল সূত্রে খবর, দোকানগুলোর কাঠ, প্লাস্টিক ও দাহ্য পদার্থে ভরতি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
দমকল কর্মীদের পাশাপাশি পুলিশও সক্রিয় ভূমিকা নেয়। স্টেশন চত্বরে ভিড় সামলাতে এবং যাত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির অঙ্ক কয়েক লক্ষ টাকার উপরে হবে। পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে মুদিখানা, ফল, পোশাকের দোকান, চা-নাশতার স্টল ইত্যাদি ছিল। বহু ব্যবসায়ীর দিনের পর দিন পরিশ্রমে গড়ে ওঠা দোকান মুহূর্তেই ভস্মীভূত হয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এটিকেই বড় স্বস্তি হিসেবে দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আগুনের কারণে সন্তোষপুর স্টেশনে সাময়িকভাবে ট্রেন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। ধোঁয়ার কারণে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ যাত্রীদের স্টেশন থেকে বাইরে পাঠানো হয়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এখনও পর্যন্ত আগুন লাগার সঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে দমকলের প্রাথমিক অনুমান—
শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।
অথবা রান্নার চুল্লি থেকেও আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলে ফরেনসিক টিমও আসতে পারে বলে দমকল সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তাঁরা। দমকল বিভাগ জানিয়েছে, “আগুনের উৎস অনুসন্ধান চলছে। তবে দোকানগুলো দাহ্য পদার্থে ভরা থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।”
অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ব্যবসায়ীরা হতাশ, কারণ তাদের সব কিছু মুহূর্তেই ছাই হয়ে গেছে। অনেকেই বলছেন, যদি সময়মতো দমকল পৌঁছাত তবে এতটা ক্ষতি হতো না।
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এখানে ব্যবসা করছি। এক মুহূর্তে সব শেষ। এখন কীভাবে পরিবার চালাব বুঝতে পারছি না।”
আরও পড়ুন :
ফিরহাদ হাকিমের ছেড়ে যাওয়া চেয়ারে বসলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, হলেন নতুন HIDCO চেয়ারম্যান
Supreme Court Verdict: আংশিক স্থগিত ‘ওয়াকফ সংশোধনী আইন ২০২৫’ | বিস্তারিত জানুন