শুভেন্দু অধিকারী বিএলও হুঁশিয়ারি
ক্লাউড টিভি ডেস্ক : রাজ্য জুড়ে ভোটার তালিকা সংশোধন বা এসআইআর পর্ব চলছে। এই সময়ে বিএলও বা ভোটার তালিকা সংশোধনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ উঠছে যে তাঁদের উপর রাজনৈতিক চাপে কাজ করতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও আবার বিএলও দের হুমকি ও ভয় দেখানোর ঘটনাও সামনে এসেছে। এমন পরিবেশে কড়া ভাষায় সতর্ক করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
দেব দীপাবলীর দিনে কাকিনাড়া গঙ্গার ঘাটে গঙ্গা আরতির আয়োজন করা হয়েছিল। এই আরতি আয়োজন করে কাকিনাড়া গঙ্গারতী সেবা সমিতি। প্রতিবছরই এই ঘাটে ওই বিশেষ দিনে গঙ্গা আরতি অনুষ্ঠিত হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেই আয়োজনেই উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। উপস্থিত ছিলেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং, ভাটপাড়ার বিধায়ক পবন কুমার সিং, বিজেপি নেতা প্রিয়াঙ্গু পান্ডে, জেলা সভাপতি তাপস ঘোষ, আইনজীবী এবং বিজেপি নেতা কৌস্তব বাগচী সহ বহু কর্মী-সমর্থক।
গঙ্গার ধারে আলো ঝলমলে পরিবেশ। শঙ্খধ্বনি, প্রদীপের আলো, আরতীর সুর—সব মিলিয়ে এক আধ্যাত্মিক আবহ তৈরি হয়। শুভেন্দু অধিকারী দীর্ঘক্ষণ সেখানে বসে আরতিতে অংশ নেন। পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি রাজ্যের বর্তমান প্রশাসনিক পরিস্থিতি এবং এসআইআর নিয়ে অভিযোগ তোলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, “রাজ্যে বিএলও দের উপর চাপ সৃষ্টি করছে তৃণমূল কংগ্রেসের জেহাদীরা।” তাঁর দাবি, অনেক জায়গায় রাজনৈতিক নির্দেশে নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে বা নাম সংযোজন আটকে দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “কেউ ভয় পেয়ে করছেন, কেউ আবার রাজনৈতিক অনুমতি করে যদি কাজ করেন, তাহলে ভুল করছেন।”
এই বক্তব্যের প্রসঙ্গেই তিনি সতর্ক সুরে বলেন,
“বিহারে এরকম পরিস্থিতিতে বহু বিএলও জেলে গেছেন। বাংলা কেউ রাজ্যের বাইরে ভাববেন না। শুধরে যান। না হলে পরিস্থিতি খারাপ হবে।”
তিনি স্পষ্ট জানান যে আগামীকালই রাজ্যে আসছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এই বিষয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ করবেন। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যে ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে নিরপেক্ষ প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী কে ক্লাস সেভেনের ভুগোল বই পড়ার পরামর্শ দিলেন শুভেন্দু অধিকারী
তিনি বলেন,
“গণতন্ত্রের প্রক্রিয়া নষ্ট হলে আমরা চুপ থাকব না। যেখানে যেখানে সমস্যা আছে, আমরা সব নথিভুক্ত করেছি। কমিশনের কাছে প্রমাণসহ দাখিল করব।”
অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে যে বিজেপি এই বিষয়টি বাড়িয়ে দেখাচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, বিজেপি রাজনৈতিকভাবে চাপ তৈরি করতে চাইছে। তবে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যে সাফ—“নির্বাচন শান্তিপূর্ণ এবং স্বচ্ছ হতে হবে।”
এদিকে স্থানীয় সূত্রের দাবি, কিছু জায়গায় সত্যিই বিএলও দের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ভোটার তালিকা সংশোধন করতে গেলে রাজনৈতিক বিরোধ, ব্যক্তিগত প্রভাব এবং স্থানীয় দাদাদের হস্তক্ষেপ কাজকে কঠিন করছে। ফলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা দেখার অপেক্ষা।
বিরোধী দলনেতার এই সরাসরি সতর্কবাণী রাজ্য রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ যোগ করেছে। এখন নজর নির্বাচন কমিশনের আগামী পদক্ষেপে।
আরও পড়ুন :
মাধুরী দীক্ষিতের কানাডার শো ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। কনসার্ট বয়কটের দাবিও উঠেছে