VoterIDFraud BangladeshiInIndia
ক্লাউড টিভি বাংলা ডেস্ক | ২৬ জুলাই ২০২৫ : বাংলাদেশের রাজনীতি উত্তাল শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগে। কিন্তু সেই ঘটনার পর ভারতের এক প্রান্তে উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য—এক বাংলাদেশি নাগরিক দীর্ঘদিন ভারতের ভোটার পরিচয়ে ছিলেন। শুধু তাই নয়, রীতিমতো ভোট দিয়েছেন (VoterIDFraud BangladeshiInIndia) । সেই ব্যক্তি আবার বাংলাদেশের বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। ঘটনা চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায়।
বাগদার বাসিন্দা শেরফুল মণ্ডলের সঙ্গে ৩০ বছর আগে বিয়ে হয় রেজাউল মণ্ডলের। সংসারও শুরু হয়। কিন্তু সম্প্রতি রেজাউল ও তাঁর ছেলে ফিরোজ মণ্ডল হঠাৎ বাংলাদেশে চলে যান। স্থানীয়রা বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরের পরই তাঁরা এদেশ ছেড়ে চলে যান। সেখানেই শুরু হয় সন্দেহ।
তদন্তে উঠে আসে বিস্ফোরক তথ্য—রেজাউল ও ফিরোজ দুজনেই বাংলাদেশের নাগরিক। অথচ তাঁদের নামে ভারতের ভোটার কার্ড রয়েছে, এবং তাঁরা ভোট দিয়েছেন।
রেজাউলের স্ত্রী শেরফুল জানান, এত বছর ধরে রেজাউলকে ভারতীয়ই ভেবেছিলেন। তিনি বলেন,
“আমার মাকে মা বলে পরিচয় দিয়েই ও ভোটার কার্ড করিয়েছিল। আমি কখনও ভাবিনি উনি বাংলাদেশি হতে পারেন। ওর ছেলে ফিরোজও ভোট দিয়েছিল!”
রেজাউলের বিরুদ্ধে ভারতীয় নাগরিকত্বের ভুয়া কাগজ তৈরির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, সীমান্ত পেরিয়ে অনেক আগে ভারত আসেন রেজাউল। এরপর ধীরে ধীরে পরিচয় গোপন করে ভোটার কার্ড সহ অন্যান্য নথি সংগ্রহ করেন।
Sukanta Majumdar : দুই জায়গায় ভোটার কার্ড? বিতর্কে বিজেপি রাজ্য সভাপতির স্ত্রী কোয়েল চৌধুরী
যুক্তরাজ্যে ১৬ বছর বয়সিদের ভোটাধিকার! সমীক্ষায় দেখা গেল, তারাই ১৮-র চেয়ে বেশি আগ্রহী ভোটদানে
বাগদার বিডিও প্রসূন প্রামাণিক জানান,
“তদন্তে উঠে এসেছে রেজাউল এবং তাঁর ছেলে ফিরোজের ভারতীয় পরিচয় ভুয়া। তাঁদের ভোটার নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকেও জানানো হয়েছে।”
তবে শেরফুল এবং তাঁর অপর সন্তানরা ভারতীয়। তাই তাঁদের ভোটাধিকার অক্ষত থাকছে।
এই ঘটনার পর রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়েছে।
বিজেপির বনগাঁ জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন,
“এটি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। একজন বাংলাদেশি এখানে থেকে ভোটার হয়েছে। সরকারের তরফে এনআরসি চালু হলে এমন ঘটনা আগেই ধরা পড়ত। তৃণমূল এদের আশ্রয় দিচ্ছে।”
অন্যদিকে তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের নেতা শাহদাদ মণ্ডল বলেন,
“রেজাউল বিএনপি ঘনিষ্ঠ। কিন্তু সে তো বহু বছর আগে ভোটার হয়েছে। তখন কে ক্ষমতায় ছিল, দেখা হোক। এখন বিষয়টি প্রশাসনের হাতে, আমরা রাজনীতিকরণ করছি না।”
বাগদা সহ উত্তর ২৪ পরগনা সীমান্তবর্তী অঞ্চল। এখানে বহু অনুপ্রবেশকারী আগেও ধরা পড়েছে। তবে ভোটার তালিকায় বাংলাদেশিদের নাম, সেটি নতুন মাত্রা যোগ করল।
এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশব্যাপী বিতর্কের মাঝেই এমন ঘটনা কেন্দ্রীয় সরকারের উপরও চাপ বাড়াবে। বিশেষ করে, যদি দেখা যায় রাজনীতিক স্বার্থে পরিচয় গোপন করে অনেকেই ভোটাধিকার পেয়ে গিয়েছেন।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে একজন বিদেশি নাগরিক সহজেই ভোটার কার্ড পেতে পারে? কেন এতো বছর প্রশাসন বিষয়টি ধরতে পারেনি? এটাই কি একমাত্র ঘটনা, না কি আরও এমন আছে—যারা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ভোট দিচ্ছেন, অথচ তাঁরা আদতে ভারতীয় নন?
আরও পড়ুন :
কুমির-ঘেরা বন্দীশিবির থেকে উড়ান: শুরু হল ‘অ্যালিগেটর আলকাট্রাজ’ থেকে অভিবাসী বিতাড়ন