WestBengalDAIssue
২৮ মে ২০২৫ (ক্লাউড টিভি) : ডিএ সংক্রান্ত মামলার রায় ঘোষণার পর থেকে রাজ্য প্রশাসন ও রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে এক নতুন টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। সেই টানাপোড়েনের মধ্যেই এবার বড় পদক্ষেপ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার (WestBengalDAIssue)। রাজ্যের অর্থ দফতর সবকটি দফতরের কাছ থেকে জানতে চেয়েছে, ডিএ-প্রাপক কর্মচারীর প্রকৃত সংখ্যা কত।
মামলা বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তবে সেই রায়ের সম্ভাব্য প্রভাবের আগে একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্যভিত্তিক পর্যালোচনা করতে চাইছে রাজ্য সরকার। সেই উদ্দেশ্যেই অর্থ দফতরের ব্যয় ও সংস্থাপন শাখা একটি চিঠি পাঠিয়ে প্রতিটি দফতরকে অনুরোধ করেছে, কোন দফতরে কতজন কর্মী বর্তমানে মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) পান, তার হিসেব সহ বিস্তারিত তালিকা জমা দিতে।
ভারতে ৮ হাজার এক্স অ্যাকাউন্ট ও সংবাদমাধ্যম বন্ধ: মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নজিরবিহীন আঘাতের অভিযোগ
এই পদক্ষেপ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ বহু সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের হারের সঙ্গে সমতা বজায় রেখে ডিএ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন। হাইকোর্ট সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে রায় দিলেও রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে। এখন রাজ্য সরকারের এই কর্মীবর্গ বিশ্লেষণ সুপ্রিম কোর্টের শুনানির প্রস্তুতির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ডিএ বিতর্কের প্রেক্ষাপট
রাজ্য সরকারি কর্মীরা দাবি করে আসছেন, কেন্দ্রীয় কর্মীদের মতো সমান হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হোক। তাঁদের বক্তব্য, মুদ্রাস্ফীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে বর্তমান ডিএ হার তাদের জীবিকা নির্বাহের পক্ষে পর্যাপ্ত নয়। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ও কর্মীদের পক্ষে গেলেও রাজ্য সরকার তা মানেনি এবং সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যে প্রায় ১০-১১ লক্ষ সরকারি কর্মী ও অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি রয়েছেন, যাঁরা ডিএ-র আওতাভুক্ত। এই বিপুল সংখ্যক কর্মীকে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিলে, বার্ষিক আর্থিক বোঝা দাঁড়াতে পারে হাজার হাজার কোটি টাকায়। তাই সরকার এখন প্রতিটি দফতর থেকে নির্দিষ্ট তথ্য জোগাড় করে একটি নির্ভুল হিসাব করতে চায়।
অর্থ দফতরের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৭ দিনের মধ্যে এই তথ্য জমা দিতে হবে। দেরি করলে দফতরগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে প্রশাসনিক মহল থেকে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য দুই রকম—একদিকে ডিএ সংক্রান্ত মামলার শুনানির প্রস্তুতি, অন্যদিকে আর্থিক পরিস্থিতি বুঝে ভবিষ্যতের পদক্ষেপ নেওয়ার রূপরেখা তৈরি করা। তবে সরকারি কর্মীদের মধ্যে একাংশ মনে করছেন, এই প্রক্রিয়া হয়তো সরকার ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অন্যদিকে, কর্মচারী সংগঠনগুলি এখনও সরকারের অবস্থান নিয়ে সন্দিহান। তাঁদের দাবি, যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত রায় দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই ধরনের পদক্ষেপ শুধুই সময়ক্ষেপণ।
আরও পড়ুন :
উপকূলের দিকে এগোচ্ছে নিম্নচাপ, বুধেই ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ শুরু দক্ষিণবঙ্গে