Breaking News

Gaza families wiped out Israel attack

গাজায় ২ হাজার ৭০০ পরিবার নিশ্চিহ্ন, ধ্বংসস্তূপে রূপ নিচ্ছে সমগ্র অঞ্চল

গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় চলছে। ইজরায়েলি হামলায় ২৭০০ পরিবার নিশ্চিহ্ন, নিহত ৬৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

গাজায় ২৭০০ পরিবার নিশ্চিহ্ন, ইসরাইলি হামলায় ধ্বংস গাজার ৯০% অবকাঠামো

Gaza families wiped out Israel attack

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইজরাইয়েলি বাহিনীর হামলায় এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত অন্তত ২ হাজার ৭০০ পরিবার সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন (Gaza families wiped out Israel attack) হয়ে গেছে। অর্থাৎ, এসব পরিবারের কোনো সদস্যই জীবিত নেই। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের সর্বশেষ বিবৃতিতে এই মর্মান্তিক তথ্য জানানো হয়।

শনিবার প্রকাশিত সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা হামলায় গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। আবাসিক ভবন, হাসপাতাল, স্কুল, মসজিদ—কোনো কিছুই রক্ষা পায়নি। ক্ষতির হিসাব দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ধ্বংস হয়েছে ৩৮টি হাসপাতাল, ৮৩৩টি মসজিদ এবং দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। TRT ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি আধুনিক বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।

গাজায় জল সংকট চরমে: সমুদ্রের নোনতা-দূষিত জলই ভরসা!

গাজায় প্রতি ৪০ মিনিটে একটি শিশু মারা যাচ্ছে!

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ৬৪ হাজার ৩৬৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬২ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার শিশু রয়েছে। স্বাস্থ্য অবকাঠামো ধ্বংস হওয়ায় আহতদের চিকিৎসা পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, এই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চললেও আন্তর্জাতিক মহল কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই নীরবতা শুধু লজ্জাজনক নয়, বরং চলমান জাতিগত নির্মূল অভিযানের সহায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।” মানবাধিকার সংগঠনগুলোও একের পর এক বিবৃতিতে গাজার পরিস্থিতিকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। প্রথমে হামাসের হামলার জবাব দিতে গিয়ে ইজরায়েল ব্যাপক বোমাবর্ষণ শুরু করে। কিন্তু ধীরে ধীরে এই সংঘাত পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে রূপ নেয়। আজ দুই বছরের বেশি সময় ধরে সেই যুদ্ধ চলছেই। তবে এখনো কোনো রাজনৈতিক সমাধান বা যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ফলে গাজার মানুষ প্রতিদিন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজারো শিশু শিক্ষার সুযোগ হারিয়েছে। পাশাপাশি ৮৩৩টি মসজিদ ভেঙে পড়েছে, যা ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে বিশাল শূন্যতা তৈরি করেছে। স্থানীয়রা বলছেন, যুদ্ধ শুধু মানুষকে হত্যা করছে না, বরং প্রজন্মের পর প্রজন্মের স্বপ্ন ও সংস্কৃতিকে মুছে দিচ্ছে।

অবরুদ্ধ গাজায় খাদ্য, পানি ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু ইসরাইল সীমান্ত বন্ধ করে রাখায় সাহায্যের প্রবাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বেঁচে থাকা মানুষও অভুক্ত ও চিকিৎসাহীন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।

গাজায় আজ আর কোনো নিরাপদ আশ্রয় নেই। হাজারো পরিবার ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শিশুদের ভবিষ্যত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিনের বোমা আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায়। আন্তর্জাতিক মহলের কার্যকর পদক্ষেপ ছাড়া এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় থামানো সম্ভব নয়। প্রশ্ন উঠছে—কত মৃত্যু হলে বিশ্ব বিবেক জাগ্রত হবে?

আরও পড়ুন :

স্বাস্থ্য ও রাজনৈতিক ঝুঁকির মাঝে ট্রাম্প আবারও রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রকে সমর্থন করলেন

“Ketamine Queen” এর দোষ স্বীকার, ম্যাথিউ পেরির মৃত্যুর মামলায় ৬৫ বছরের সাজা হতে পারে

ad

আরও পড়ুন: