GazaHungerCrisis
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় ইজরায়েলি অবরোধ ও অব্যাহত হামলার কারণে দীর্ঘদিন ধরে চলমান মানবিক সংকট ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজা এখন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত অঞ্চল (GazaHungerCrisis), যেখানে পুরো জনসংখ্যা চরম অনাহার ও দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।জাতিসংঘের ভাষায়, ২৩ লাখ গাজাবাসীই এখন ‘বিপর্যয়কর ক্ষুধা’ বা ফেজ-৫ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা-র মধ্যে রয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি আগে কখনো কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে দেখা যায়নি।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক বিবৃতিতে বলেন,
“গাজা এখন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত স্থান। এটি একমাত্র অঞ্চল, যেখানে জনসংখ্যার শতভাগ মানুষই দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।”
তিনি জানান, গাজার ভেতর খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যেসব সীমিত সহায়তা পাঠানো হয়, তাও আক্রমণ ও লুটপাটের শিকার হচ্ছে।
শুক্রবার একটি মেডিকেল সরবরাহবাহী ট্রাক দেইর আল-বালাহ অঞ্চলের ফিল্ড হাসপাতালের জন্য রওনা দিয়েছিল। কিন্তু এর অধিকাংশ উপকরণ লুটপাট হয়ে যায়।
ডুজারিক বলেন,
“এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। যুদ্ধ বিধ্বস্ত মানুষের জন্য সামান্য সহায়তাও যদি সুরক্ষিত না থাকে, তাহলে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়।”
স্থানীয় ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছেন, খাবার পাওয়া এখন অলৌকিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ত্রাণের আশায় পথে নামছে।
তারা বলছেন,
“এক ব্যাগ আটা বা এক প্যাকেট খাবার পাওয়ার জন্য মানুষ যা ইচ্ছে করতে পারে। ক্ষুধার কাছে এখন কোনো আইন-শৃঙ্খলা মানে নেই।”
ত্রাণ সংস্থাগুলোর দাবি, সুনির্দিষ্ট ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র না থাকায়, খাদ্য পৌঁছালেও তা সঠিকভাবে বণ্টন সম্ভব হচ্ছে না। খাদ্যবাহী ট্রাকগুলো পৌঁছার আগেই ভিড় ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা UNRWA জানিয়েছে, জর্ডনের আম্মানে একটি গুদামে গাজার জন্য এক মাসের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী মজুত রয়েছে।এই ত্রাণে কমপক্ষে ২ লাখ মানুষকে সহায়তা করা সম্ভব। তবে ইজরায়েলি সীমান্ত কর্তৃপক্ষ বাধা না সরালে এই ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব নয়।
রাতে ঘুমানোর সঠিক সময় কখন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঘুমানোই শ্রেয়
জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো একাধিকবার নিরাপদ করিডোর চালুর দাবি জানালেও, এখনো পর্যন্ত কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে গাজায় বাস্তবিক অর্থেই দুর্ভিক্ষ শুরু হবে।
বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক শিশু অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় মারা গেছে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন।
বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি জাতিসংঘের আহ্বান, গাজায় অবিলম্বে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকর না হলে ইতিহাসের ভয়াবহতম মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে প্যালেস্টাইন।
আরও পড়ুন :
আইসিসি ক্রিকেটে আনছে বড় পরিবর্তন, টেস্ট ও ওয়ানডে—দুই ফরম্যাটেই নতুন নিয়ম