GlobalWarming
ক্লাউড টিভি নিউজ ডেস্ক : বিশ্ব এখন এমন এক চরম বাস্তবতার মুখোমুখি, যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শুধুমাত্র ভবিষ্যতের ভয় নয়, বরং তা এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (World Meteorological Organization – WMO) তাদের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে অন্তত একটি বছর—ইতিহাসের উষ্ণতম বছর (GlobalWarming) হিসেবে রেকর্ড গড়বে, যার সম্ভাবনা প্রায় ৮০ শতাংশ।
প্রতিবেদনটি বলছে, ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে যেকোনো একটি বছরে বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হতে পারে। বিষয়টিকে বিজ্ঞানীরা আখ্যা দিয়েছেন ‘শকিং’ বা ‘আঘাতজনক’ হিসেবে।
২০২০ সালে ডব্লিউএমও জানায়, তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি বাড়ার সম্ভাবনা ছিল ৪০ শতাংশ। কিন্তু সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ সম্ভাবনা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ শতাংশে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের গতি যে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে তা স্পষ্ট করে দেয়।
ডব্লিউএমওর প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০২৫-২০২৯ সালের মধ্যে গড় তাপমাত্রা থাকবে প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এই তথ্য প্যারিস জলবায়ু চুক্তির উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যের জন্য এক বড় হুমকি। চুক্তিতে বলা হয়েছিল, গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই উষ্ণতা শুধুমাত্র পরিবেশ নয়, বরং মানুষের স্বাস্থ্য, অর্থনীতি এবং প্রাকৃতিক ব্যবস্থার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
বিশেষ করে নিচের কয়েকটি বিষয়ে ঝুঁকি বাড়বে:
দাবানলের ঘটনা বৃদ্ধি
খরা ও পানির সংকট
আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধস
কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন হ্রাস
তাপমাত্রা জনিত রোগ ও মৃত্যুহার বৃদ্ধি
বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবাশ্ম জ্বালানি যেমন কয়লা, তেল ও গ্যাস পোড়ানো যদি বন্ধ না করা হয়, তাহলে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে।
২৮ বছর পর বৈশাখে ‘শীতল’ রাত! কলকাতায় তাপমাত্রা কমল ২০ ডিগ্রি, চমকে দিল আবহাওয়া
তীব্র গরমের আশঙ্কা থাকলেও কালবৈশাখীতে মিলবে স্বস্তি: মে মাসের তাপপ্রবাহ নিয়ে মৌসম ভবনের পূর্বাভাস
ডব্লিউএমওর এই গবেষণায় যুক্ত আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ এডাম স্কেইফে বলেন,
“এটা অবাক করার মতো, তবে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলা যাবে না। এটি এখন বাস্তবের পথে।”
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, বিশ্বের ১৫টি দেশের আবহাওয়া ইনস্টিটিউট থেকে পাওয়া তথ্য ও মডেল বিশ্লেষণ করেই এমন প্রাক্কলন করা হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজ্ঞানীরা বলছেন:
নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে আরও বেশি ঝোঁক
⛽ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানো
বন উজাড় বন্ধ
বৃক্ষরোপণ বাড়ানো
বিশ্বব্যাপী জবাবদিহিতা ও জলবায়ু তহবিল তৈরি
বিশ্ব আর “সময় আছে” এই অজুহাতে গা ভাসিয়ে চলতে পারে না। জলবায়ু সংকট এখন বাস্তব।
ডব্লিউএমওর সর্বশেষ প্রতিবেদন শুধু সতর্কতা নয়, এটি একটি কার্যকর ও জরুরি কর্মপরিকল্পনার জন্য বার্তা। বিশ্ববাসী এখন সিদ্ধান্ত নিক—আরও উষ্ণ পৃথিবীতে বাস করবে, নাকি এখনই রুখে দাঁড়াবে?
আরও পড়ুন :
কত জন ডিএ প্রাপক রয়েছেন, সব দফতরের কাছে জানতে চাইল নবান্ন
উপকূলের দিকে এগোচ্ছে নিম্নচাপ, বুধেই ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ শুরু দক্ষিণবঙ্গে