KaladanProject
২৯ মে ২০২৫, নয়াদিল্লি: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ বাড়াতে শুরু হওয়া ‘কালাদান মাল্টি মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট’ (KMMTTP) এখন শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নের একটি দৃষ্টান্ত নয়, বরং কৌশলগতভাবে বাংলাদেশের উপর নির্ভরতা কমানোর একটি স্পষ্ট সংকেতও। বাংলাদেশ যদি কোনওভাবে ট্রানজিট সুবিধা বন্ধ করে দেয়, তাহলেও ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে পৌঁছনোর জন্য এখন তৈরি হচ্ছে বিকল্প পথ — ‘কালাদান’ (KaladanProject)।
‘কালাদান’ হল একটি নদীর নাম, যা মায়ানমারের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত। সেই নদীকে কেন্দ্র করে তৈরি হচ্ছে এক মাল্টি-মোডাল পরিবহন পথ — যেখানে জলপথ, নদীপথ ও স্থলপথ মিলিয়ে কলকাতা থেকে সরাসরি মিজোরাম পর্যন্ত পৌঁছানো যাবে। ভারত এবং মায়ানমারের যৌথ প্রকল্প এটি। সম্পূর্ণ হলে ভাইজাগ ও কলকাতা বন্দর থেকে সহজেই পণ্য পৌঁছবে মেঘালয়, মিজোরাম, সিকিম ও ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলিতে।
কলকাতা থেকে সিতবে (মায়ানমার) – ৫৩৯ কিমি জলপথ
সিতবে থেকে পালেটওয়া – ১৫৮ কিমি কালাদান নদী দিয়ে
পালেটওয়া থেকে জোরিনপুই (ভারত সীমান্ত) – ১০৮ কিমি চার লেনের রোড
জোরিনপুই থেকে আইজল হয়ে সিলচর, শিলং পর্যন্ত সংযোগ
এই রুট ব্যবহারে কলকাতা থেকে আইজলের দূরত্ব হবে মাত্র ৯৫০ কিমি। তুলনায়, শিলিগুড়ি করিডর দিয়ে এই দূরত্ব ১৮৮০ কিমি। অর্থাৎ সময় ও খরচ — দুটোই বাঁচবে প্রায় অর্ধেক।
বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেলের ভারতীয় উত্তর-পূর্ব দখলের হুমকি: কূটনৈতিক উত্তেজনার নতুন মাত্রা
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫: রেফারিরা বডি ক্যামেরা পরবেন, গোল গোলরক্ষকরাও শাস্তি পাবেন
প্রকল্পটির কাজ ২০০৮ সালে পরিকল্পিত হয়, ২০১০-এ শুরু হয়, কিন্তু ২০২১-এর মায়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রকল্পটি বড় ধাক্কা খায়। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘আরাকান আর্মি’ নামে এক সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী এখন সেই এলাকাজুড়ে কার্যত নিয়ন্ত্রণ করছে। যে রাস্তা দিয়ে ভারতীয় পণ্য পৌঁছাবে, তার বেশিরভাগটাই ওই গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণাধীন। ফলে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ এখন সেই রাজনৈতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে।
সূত্র বলছে, ভারত সরকার বর্তমানে সরাসরি আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালাচ্ছে। এয়ারকন ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি সংস্থা বর্তমানে প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ করছে এবং চেষ্টা হচ্ছে জুলাই ২০২৫-এর মধ্যেই কাজ শেষ করতে। তবে তা নির্ভর করছে রাজনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতিশীলতার উপর। মায়ানমারের সেনা সরকার এখন আরাকান আর্মিকে “শত্রু” বলেই বিবেচনা করে, ফলে ভারতের কূটনৈতিক চাল এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন :
আলিপুরদুয়ারে জনসভা থেকে মোদীর তৃণমূল বিরোধী তোপ: ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু
গোপনে বিয়ে সারলেন ইউটিউব তারকা খান স্যার, ছাত্রদের জন্য থাকছে বিশেষ ভোজ