Breaking News

উত্তর কোরিয়া বিদেশি চলচ্চিত্র মৃত্যুদণ্ড

উত্তর কোরিয়ায় বিদেশি চলচ্চিত্র ও নাটক দেখলে মৃত্যুদণ্ড

উত্তর কোরিয়ায় বিদেশি সিনেমা বা নাটক দেখা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। জাতিসংঘের নতুন প্রতিবেদনে উঠেছে ভয়ঙ্কর তথ্য।

উত্তর কোরিয়ায় বিদেশি চলচ্চিত্র দেখলে মৃত্যুদণ্ড | জাতিসংঘের প্রতিবেদন

উত্তর কোরিয়া বিদেশি চলচ্চিত্র মৃত্যুদণ্ড

ক্লাউড টিভি ডেস্ক : বিশ্বের অন্যতম রহস্যময় রাষ্ট্র উত্তর কোরিয়া আবারও আলোচনায় এসেছে কঠোর আইন ও শাস্তির কারণে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সেখানে বিদেশি চলচ্চিত্র ও নাটক দেখা কিংবা কারও সঙ্গে শেয়ার করার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত কার্যকর করা হচ্ছে।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উত্তর কোরিয়ার ভয়ঙ্কর বাস্তবতা তুলে ধরেছে। গত এক দশকে দেশটি নাগরিকদের জীবনের প্রতিটি খুঁটিনাটি নিয়ন্ত্রণ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আধুনিক দুনিয়ায় আর কোনো দেশ এত কড়াকড়ি আরোপ করেনি।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক জানান, প্রযুক্তির সহায়তায় উত্তর কোরিয়ার সরকার নজরদারি বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। নাগরিকদের প্রতিটি পদক্ষেপ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তিনি সতর্ক করেছেন, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে উত্তর কোরীয়রা আরও বেশি দুর্ভোগ, নিপীড়ন ও আতঙ্কের মুখে পড়বে।

গাজা এখন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত এলাকা: জাতিসংঘ

আগামী ৫ বছরের মধ্যে ভেঙে যেতে পারে সব তাপমাত্রা রেকর্ড: ডব্লিউএমওর সতর্কবার্তা

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক মতবিরোধ বা ভিন্নমত প্রকাশ নয়, এমনকি বিদেশি সংস্কৃতির সংস্পর্শে আসাও এখন উত্তর কোরিয়ায় জীবনহানির কারণ হতে পারে। বিদেশি সিনেমা বা নাটক দেখা, গান শোনা কিংবা অন্য কারও সঙ্গে এসব শেয়ার করার অভিযোগেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

এছাড়া, গত ১০ বছরে উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে আসা ৩০০ জনেরও বেশি মানুষের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে। তাদের বয়ানে উঠে এসেছে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা। একাধিক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, বিনোদনের জন্য বিদেশি কনটেন্ট দেখা মানুষদের জন্য মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আগে থেকেই উদ্বেগ ছিল। এবার জাতিসংঘের প্রতিবেদন সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশি সংস্কৃতি ও তথ্য প্রবাহ ঠেকাতে দেশটি যেভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা বিশ্ব সভ্যতার জন্য এক বড় হুমকি।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বহুদিন ধরেই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে। তারা বলছে, দেশটির শাসনব্যবস্থা নাগরিক স্বাধীনতা একেবারেই অস্বীকার করে। শিক্ষা, চাকরি, ভ্রমণ, এমনকি ব্যক্তিগত বিনোদনের ক্ষেত্রেও কোনো স্বাধীনতা নেই। আর এখন মৃত্যুদণ্ডের মতো চরম শাস্তি তাদের জীবনে ভয়াবহ আতঙ্ক তৈরি করছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইতিমধ্যেই উত্তর কোরিয়ার এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানিয়েছে। তবে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না। কারণ দেশটির সঙ্গে যোগাযোগের সব পথ কার্যত বন্ধ। উত্তর কোরিয়া সরকার বাইরের চাপকে প্রত্যাখ্যান করছে এবং নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে দাবি করছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের সব মাধ্যম কঠোর নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট বা টেলিভিশনের ব্যবহার সীমিত। এর ফলে সাধারণ মানুষ বাইরের দুনিয়ার কোনো খবরই পায় না।

বিশ্লেষকদের মতে, এভাবে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হলে জনগণের মধ্যে এক ধরনের অন্ধকার সমাজ গড়ে ওঠে। ফলে ভিন্নমত বা নতুন চিন্তার জায়গা তৈরি হয় না। অথচ বিদেশি চলচ্চিত্র, নাটক বা সংগীত সাধারণত নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করায়। তাই শাসকগোষ্ঠী এগুলোকে সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের এই প্রতিবেদন আবারও মনে করিয়ে দিল যে উত্তর কোরিয়ার ভেতরে মানবিক সংকট দিন দিন প্রকট হচ্ছে। আর সেই সংকটের সবচেয়ে বড় মূল্য দিচ্ছে সাধারণ নাগরিকেরা।

আরও পড়ুন :

উপরাষ্ট্রপতি পদে শপথ নিলেন রাধাকৃষ্ণন

ইতিহাস গড়লেন সুশীলা কারকি, নেপালের প্রথম মহিলা অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী

ad

আরও পড়ুন: