KhomeiniRoots
ক্লাউড টিভি ডেস্ক: ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ যখন মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতার পারদ বাড়াচ্ছে, তখন এক ঐতিহাসিক তথ্য নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইরানের ইসলামি শাসনব্যবস্থার স্থপতি এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি—তার শিকড় (KhomeiniRoots) ছিল ভারতের উত্তরপ্রদেশে!
‘খালিজ টাইমস’ এবং ‘ইন্ডিয়া টুডে’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, উত্তরপ্রদেশের বারাবাঁকি জেলার এক ছোট্ট গ্রাম কিন্তুরেই জন্ম হয়েছিল খোমেনির দাদার—সৈয়দ আহমেদ মুসাভি হিন্দির। তিনি ছিলেন একজন শিয়া ধর্মীয় পণ্ডিত ও চিন্তাবিদ। তার সন্তানদের মাধ্যমে ইরানে জন্ম হয় সেই রুহুল্লাহ খোমেনির, যিনি ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের নায়ক হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছিলেন।
সৈয়দ আহমেদ মুসাভি হিন্দির জন্ম হয় ১৮০০ সালে কিন্তুর গ্রামে।
তার পিতা দিন আলি শাহ এসেছিলেন ইরানের কেন্দ্রীয় অঞ্চল থেকে, মুঘল আমলে।
ব্রিটিশ শাসনের সময়ে ইসলাম ও শিয়া মতবাদের পুনর্জাগরণে অনুপ্রাণিত হয়ে আহমেদ হিন্দি ইরাকের নাজাফ হয়ে ইরানের খোমেইন শহরে গিয়ে স্থায়ী হন।
সেখানেই জন্ম নেয় খোমেনির পরিবার এবং গড়ে ওঠে ইসলামী বিপ্লবের বীজ।
এমনকি তিনি ‘হিন্দি’ উপাধি ধরে রেখেছিলেন আমৃত্যু। ইরানের অনেক ঐতিহাসিক রেকর্ডে তার নাম লেখা আছে—”আহমদ হিন্দি” হিসেবে। ইরানের ধর্ম ও রাজনীতিতে তার ভারতীয় পরিচয় ছিল অস্বাভাবিক হলেও গর্বের বিষয়।
ট্রাম্প ফ্যাসিস্ট, দ্বিতীয় প্রজন্মের অপরাধী— বিস্ফোরক মন্তব্য মার্কিন ইতিহাসবিদ এভার্ন শোয়্যাপের
বর্তমানে ইরান ও ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে খোমেনির ভারতীয় শিকড় উঠে আসার কারণ কয়েকটি:
মানসিক ও ঐতিহাসিক সংযোগ: খোমেনির রক্তে যে ভারতের ছোঁয়া ছিল, তা ইরানিদের মধ্যে ধর্মীয় আবেগ ও ঐতিহাসিক আত্মপরিচয়কে জাগ্রত করছে।
কিন্তুরে প্রার্থনা: সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বারাবাঁকির কিন্তুর গ্রামে এখন খোমেনির আত্মার শান্তি ও ইরানের নিরাপত্তার জন্য দোয়া-মোনাজাত হচ্ছে।
রাজনৈতিক প্রভাব: এই ঐতিহাসিক সংযোগ এখন আন্তর্জাতিক কূটনীতির আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে—বিশেষ করে ভারত-ইরান সম্পর্কের প্রসঙ্গে।
কিন্তুর গ্রামের বাসিন্দা মহসিন রেজা বলেন,
“আমরা তো গর্বিত! এত বড় নেতা আমাদের গ্রামের রক্ত থেকে এসেছেন—এই যুদ্ধেও তার উত্তরসূরিরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।”
গ্রামের প্রাচীন কবরস্থানে আজও রয়েছে সৈয়দ আহমেদ হিন্দির পূর্বপুরুষদের কয়েকটি কবর। স্থানীয়রা বলছেন, ইরানে এই মুহূর্তে চলা অস্থিরতার সময়ে সেই স্মৃতি আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
১৯৯৯ সালে প্রকাশিত “Khomeini: Life of the Ayatollah” নামক জীবনী বইয়ে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, খোমেনির দাদা আহমেদ হিন্দি ছিলেন একজন ভারতীয় শিয়া ধর্মশিক্ষক, যিনি নাজাফ ও পরে ইরানে গমন করেন। তার এই জার্নি শুধু পারিবারিক নয়, ইতিহাসের গতিপথ বদলে দেয়।
ভারতের সঙ্গে ইরানের ঐতিহাসিক সম্পর্ক:
দিল্লি, হায়দরাবাদ, লখনউতে বহু ইরানি বংশোদ্ভূত পরিবার এখনও বসবাস করেন।
শিয়া মতবাদ ও ফার্সি সাহিত্য ভারতীয় ইসলামি সংস্কৃতির অংশ।
খোমেনির পরিবার সেই সংযোগের একটি দৃশ্যমান নিদর্শন।
এই তথ্য নতুন করে তুলে ধরছে ভারত ও ইরানের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঘনিষ্ঠতা।
আরও পড়ুন :
শেষপর্যন্ত যুদ্ধবিরতি! ইরান-ইসরাইল সংঘর্ষে আপাত ইতি, ট্রাম্পের ঘোষণা ঘিরে বিতর্ক
‘জুয়াড়ি ট্রাম্প’ যুদ্ধ শুরু করেছেন, শেষ করব আমরা: হুঁশিয়ারি আইআরজিসির